সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি দূতাবাসের কনস্যুলার ভবনে বিমান হামলায় রেভল্যুশনারি গার্ডের সাত সদস্য নিহত হওয়ার পর প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। মধ্যপ্রাচ্যে সহিংসতা বাড়ার আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার সকল যুদ্ধ ইউনিটের ছুটি বাতিল করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, ‘পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, আইডিএফের (ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী) সকল যুদ্ধ ইউনিটের ছুটি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হবে। আইডিএফ যুদ্ধে রয়েছে এবং প্রয়োজন অনুসারে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি নিয়মিতভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে।’
গতকাল বুধবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে যে, তারা বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য সংরক্ষিত সেনাদের খসড়া তৈরি করেছে। জিপিএস সংশ্লিষ্ট পরিষেবাগুলো আজ বৃহস্পতিবার ব্যাহত হওয়ার খবর জানিয়েছেন রয়টার্সের সংবাদদাতা এবং তেল আবিবের বাসিন্দারা। উল্লেখ্য, ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্যবস্তু হওয়া থেকে রক্ষা পেতে ব্যবহৃত হয় জিপিএস পরিষেবা।
গত সোমবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি দূতাবাসের কনস্যুলার ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের পাঁচজন সামরিক উপদেষ্টাসহ দুই জেনারেল নিহত হন। এ হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে ইরান। এ হামলার দায় ইসরায়েল নিশ্চিত বা অস্বীকার কিছুই করেনি। তবে এর পেছনে ইসরায়েলি বিমানবাহিনীই ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে মধ্যপ্রাচ্যে সহিংসতা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকেই গাজায় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। সে সঙ্গে, লেবানন সীমান্তে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর সঙ্গেও হচ্ছে গুলি বিনিময়। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছে ইরান সমর্থিত গ্রুপগুলো। তবে এখনো পর্যন্ত সম্মুখ সমরে অংশ নেওয়া এড়িয়ে গেছে ইরান।
প্রাক্তন ইসরায়েলি গোয়েন্দা প্রধান আমোস ইয়াদলিন বলেছেন যে, দামেস্কে আঘাতের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আগামীকাল শুক্রবারকে বেছে নিতে পারে ইরান। কারণ, এটিই রমজান মাসের শেষ শুক্রবার এবং সেদিনই ইরানি কুদস (জেরুজালেম) দিবস। ইরান সরাসরি বা কোনো সমর্থিত গ্রুপের মাধ্যমে এই প্রতিশোধ নিতে পারে।
ইসরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনেডি স্কুলের বেলফার সেন্টারের সিনিয়র ফেলো ইয়াদলিন বলেন, ‘আগামীকাল যদি ইরান প্রতিক্রিয়া দেখায় তবে অবাক হব না। আতঙ্কিত হবেন না। আশ্রয়কেন্দ্রে দৌড়াবেন না। আগামীকালের জন্য প্রস্তুত থাকুন। আক্রমণের ফলাফলের ওপর নির্ভর করবে যে, সহিংসতা কতটুকু বাড়বে।’