০২:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হতাশ কক্সবাজারের ব্যবসায়ীরা

বিদায়ের পথে পবিত্র রমজান। আর মাত্র তিনদিন পর পবিত্র ঈদুল ফিতর। প্রতিবছর ঈদের ছুটিতে পর্যটকে ভরপুর হয় কক্সবাজার। তবে, এবার ঈদ ও পহেলা বৈশাখ নিয়ে টানা ছুটি থাকলেও বিগত সময়ের মতো কক্সবাজারে হোটেল-মোটেলে আগাম বুকিং নেই। টানা পাঁচদিন ছুটিতে কেবল ১২ ও ১৩ এপ্রিল বুকিং ৮০-৯০ শতাংশ রয়েছে। বাকি দিনগুলো উল্লেখ করার মতো বুকিং নেই। ফলে ছাড় দিয়েও আশানুরূপ ফল মিলছে না বলে দাবি হোটেল কর্তৃপক্ষের।

কক্সবাজার হোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, প্রতি বছর ঈদ ও দিবসভিত্তিক ছুটিতে লাখো পর্যটকে সরগরম হয় কক্সবাজার। এবারো আশা আগের মতোই পর্যটক হবে। কিন্তু চৈত্রের দাবদাহে পুড়ছে সারাদেশ। এ কারণে, আশানুরূপ পর্যটক আসবে কি না সন্দেহ রয়েছে।

তবে পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ঈদের আগেই হয়তো আরও কিছু বুকিং হতে পারে। এ অবস্থা চললে এবারের ঈদে ব্যবসা মন্দা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তবে অতীতের মতো পর্যটকদের নিরাপত্তায় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্নের কথা জানিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। আর পর্যটক হয়রানি বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এদিকে ঈদের ছুটিতে আসা পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে সাজাতে ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা। হোটেলের ভেতর-বাহিরে রং ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন সব দিকে খেয়াল রাখছেন কর্তৃপক্ষ।

কক্সবাজার হোটেল, গেস্ট হাউজ ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম নেওয়াজ বলেন, বিগত সময়ে ১৫ রোজার মধ্যে হোটেলের ৬০ ভাগ কক্ষ বুকিং হতো। এবারে চৈত্রের দাবদাহের কারণে সেটা কম। এরপরও আমরা আশাবাদী। পর্যটকদের পরিচ্ছন্ন আবহ দিতে হোটেল-মোটেল পরিষ্কার করা হচ্ছে। তবে, বিগত সময়ের হিসেবে করলে এবারে ঈদ মৌসুমে তেমন একটা ব্যবসা নাও হতে পারে।

তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইসের বিপণন ইনচার্জ ইমতিয়াজ সোমেল বলেন, ঈদ বলে নয়, আমরা সব সময় পর্যটকদের সেবা দিতে প্রস্তুত থাকি। তবে এবারের ঈদের আগে পরে প্রায় দশ দিনের ছুটি থাকলেও ব্যবসা হতে পারে মাত্র চার দিন। এখনো হোটেল কক্ষের তেমন বুকিং না হলেও ১২ থেকে ১৪ এপ্রিল তিন দিন ৯০ শতাংশ বুকিং রয়েছে।

ওশান প্যারাডাইসের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, এবার বাংলা নববর্ষও ঈদের ছুটি পর পরই পড়েছে। করোনা ও রোজার মাঝে পড়ায় গত কয়েক বছর বাংলা বর্ষবরণে অনুষ্ঠান বন্ধ ছিল। কিন্তু এবার পুরোনো ঐতিহ্য ধরে নববর্ষ উপলক্ষে পহেলা বৈশাখ থেকে তিনদিনের মেলার আয়োজন করছে ওশান প্যারাডাইস কর্তৃপক্ষ। বাঙালিয়ানা ষোলআনা পূর্ণ করতে জলের গান ব্যান্ডদলসহ নানা আয়োজন থাকছে মেলায়।

হোটেল দি সী প্রিন্সেসের ব্যবস্থাপক মাজেদুল বশর চৌধুরী সুজন বলেন, ঈদের সময়ও রুম ভাড়ায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছে। এরপরও পুরো বন্ধ সময়টায় শতভাগ বুকিং নেই। ঈদের পরদিন শুক্রবার থেকে দুদিন শতভাগ বুকিং রয়েছে। অন্য দিনগুলোতে বুকিং তেমন না থাকায় ধারণা করছি এবারের ঈদে আগের মতো ব্যবসা হবে না।

এদিকে, পর্যটকের নিরাপত্তায় কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, পর্যটকের সেবা নিশ্চিত ও নিরাপত্তায় সচেষ্ট রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। আগত অতিথিদের ভালো অনুভূতি দিতে প্রস্তুত সবাই। পর্যটন স্পট এবং সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে পোশাকধারীদের পাশাপাশি সদস্যরা সাদা পোশাকেও থাকবে। সবজায়গায় থাকবে মনিটরিং।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, পর্যটকদের হয়রানি বন্ধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া আছে। কোনো হোটেলে অতিরিক্ত ভাড়া কিংবা চালকের হাতে হয়রানির অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

জমে উঠেছে বৃহত্তর বাদশাঘোনা সমাজ পরিচালনা কমিটির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা

হতাশ কক্সবাজারের ব্যবসায়ীরা

প্রকাশিত সময় : ০১:২২:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৪

বিদায়ের পথে পবিত্র রমজান। আর মাত্র তিনদিন পর পবিত্র ঈদুল ফিতর। প্রতিবছর ঈদের ছুটিতে পর্যটকে ভরপুর হয় কক্সবাজার। তবে, এবার ঈদ ও পহেলা বৈশাখ নিয়ে টানা ছুটি থাকলেও বিগত সময়ের মতো কক্সবাজারে হোটেল-মোটেলে আগাম বুকিং নেই। টানা পাঁচদিন ছুটিতে কেবল ১২ ও ১৩ এপ্রিল বুকিং ৮০-৯০ শতাংশ রয়েছে। বাকি দিনগুলো উল্লেখ করার মতো বুকিং নেই। ফলে ছাড় দিয়েও আশানুরূপ ফল মিলছে না বলে দাবি হোটেল কর্তৃপক্ষের।

কক্সবাজার হোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, প্রতি বছর ঈদ ও দিবসভিত্তিক ছুটিতে লাখো পর্যটকে সরগরম হয় কক্সবাজার। এবারো আশা আগের মতোই পর্যটক হবে। কিন্তু চৈত্রের দাবদাহে পুড়ছে সারাদেশ। এ কারণে, আশানুরূপ পর্যটক আসবে কি না সন্দেহ রয়েছে।

তবে পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ঈদের আগেই হয়তো আরও কিছু বুকিং হতে পারে। এ অবস্থা চললে এবারের ঈদে ব্যবসা মন্দা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তবে অতীতের মতো পর্যটকদের নিরাপত্তায় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্নের কথা জানিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। আর পর্যটক হয়রানি বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এদিকে ঈদের ছুটিতে আসা পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে সাজাতে ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা। হোটেলের ভেতর-বাহিরে রং ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন সব দিকে খেয়াল রাখছেন কর্তৃপক্ষ।

কক্সবাজার হোটেল, গেস্ট হাউজ ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম নেওয়াজ বলেন, বিগত সময়ে ১৫ রোজার মধ্যে হোটেলের ৬০ ভাগ কক্ষ বুকিং হতো। এবারে চৈত্রের দাবদাহের কারণে সেটা কম। এরপরও আমরা আশাবাদী। পর্যটকদের পরিচ্ছন্ন আবহ দিতে হোটেল-মোটেল পরিষ্কার করা হচ্ছে। তবে, বিগত সময়ের হিসেবে করলে এবারে ঈদ মৌসুমে তেমন একটা ব্যবসা নাও হতে পারে।

তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইসের বিপণন ইনচার্জ ইমতিয়াজ সোমেল বলেন, ঈদ বলে নয়, আমরা সব সময় পর্যটকদের সেবা দিতে প্রস্তুত থাকি। তবে এবারের ঈদের আগে পরে প্রায় দশ দিনের ছুটি থাকলেও ব্যবসা হতে পারে মাত্র চার দিন। এখনো হোটেল কক্ষের তেমন বুকিং না হলেও ১২ থেকে ১৪ এপ্রিল তিন দিন ৯০ শতাংশ বুকিং রয়েছে।

ওশান প্যারাডাইসের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, এবার বাংলা নববর্ষও ঈদের ছুটি পর পরই পড়েছে। করোনা ও রোজার মাঝে পড়ায় গত কয়েক বছর বাংলা বর্ষবরণে অনুষ্ঠান বন্ধ ছিল। কিন্তু এবার পুরোনো ঐতিহ্য ধরে নববর্ষ উপলক্ষে পহেলা বৈশাখ থেকে তিনদিনের মেলার আয়োজন করছে ওশান প্যারাডাইস কর্তৃপক্ষ। বাঙালিয়ানা ষোলআনা পূর্ণ করতে জলের গান ব্যান্ডদলসহ নানা আয়োজন থাকছে মেলায়।

হোটেল দি সী প্রিন্সেসের ব্যবস্থাপক মাজেদুল বশর চৌধুরী সুজন বলেন, ঈদের সময়ও রুম ভাড়ায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছে। এরপরও পুরো বন্ধ সময়টায় শতভাগ বুকিং নেই। ঈদের পরদিন শুক্রবার থেকে দুদিন শতভাগ বুকিং রয়েছে। অন্য দিনগুলোতে বুকিং তেমন না থাকায় ধারণা করছি এবারের ঈদে আগের মতো ব্যবসা হবে না।

এদিকে, পর্যটকের নিরাপত্তায় কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, পর্যটকের সেবা নিশ্চিত ও নিরাপত্তায় সচেষ্ট রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। আগত অতিথিদের ভালো অনুভূতি দিতে প্রস্তুত সবাই। পর্যটন স্পট এবং সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে পোশাকধারীদের পাশাপাশি সদস্যরা সাদা পোশাকেও থাকবে। সবজায়গায় থাকবে মনিটরিং।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, পর্যটকদের হয়রানি বন্ধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া আছে। কোনো হোটেলে অতিরিক্ত ভাড়া কিংবা চালকের হাতে হয়রানির অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।