১২:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসরায়েলকে বাঁচাতে চীনের হাতে-পায়ে ধরে কান্নাকাটি যুক্তরাষ্ট্রের

ইরানের হামলা থেকে ইসরায়েলকে বাঁচাতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এর অংশ হিসেবে এবার চীনের দ্বারস্থ হলো দেশটি।

সিএনবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমা কূটনীতিকরা ইসরায়েলে ইরানের হামলা ঠেকাতে উঠেপড়ে লেগেছেন। তারা এ কাজে চীনকে ব্যবহার করতে চাইছেন। বিভিন্নভাবে চীনকে অনুরোধ করছেন, দেশটি যেন তেহরানকে হামলার ভয়বহতা সম্পর্কে বুঝিয়ে এ থেকে বিরত রাখে।

এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইসহ তুরস্ক ও সৌদি আরবের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এই সপ্তাহের শুরু থেকে দফায় দফায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কূটনীতিকদের সঙ্গে ইরান ইস্যুতে আলোচনা চলছে।

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বৃহস্পতিবার বলেছেন, ব্লিঙ্কেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বিশদ কথা বলেছেন। তিনি তাদের স্পষ্ট করতে বলেছেন, উত্তেজনা কারো স্বার্থে নয়। দেশগুলোর উচিত ইরানকে উত্তেজনা না বাড়াতে বুঝানো।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গত কয়েক দিন ধরে ইউরোপীয় মিত্র এবং অংশীদারদের সঙ্গে কথা বলছি। তাদেরও ইরানকে একটি স্পষ্ট বার্তা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছি। বার্তাটি হলো, উত্তেজনা ইরানের স্বার্থে নয়, এটি অঞ্চলের স্বার্থে নয় এবং এটি বিশ্বের স্বার্থেও নয়।’

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ আগামী সপ্তাহে চীন সফর করবেন। তিনিও ইরান ইস্যুতে বেইজিংয়ের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

চীন ব্রিকস জোটেরও সদস্য। রাশিয়া ও ইরানের তেল রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদারও দেশটি। উদীয়মান বাজারে ইরান প্রচ্ছন্নভাবে চীনের নেতৃত্ব মেনে চলে। তাই ইরানকে দমাতে চীনকে কার্যকর মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র।

চীনের দ্বারস্থ হওয়ার বিষয়টি নতুন নয়। এর আগেও লোহিত সাগরে ইরান-সমর্থিত হুথিদের আক্রমণের মুখে যুক্তরাষ্ট্র চীনকে এ ধরনের অনুরোধ করেছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন সময় স্বীকার করেছে, মার্কিনরা বারবার চাইলেও ইরানের ওপর চীনের কোনো ধরনের চাপ প্রয়োগের প্রমাণ তারা পাননি।

এবার যেহেতু পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাকর তাই চীনকে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজে লাগাতে পশ্চিমা কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে। আশা করা হচ্ছে, চীন আহ্বান জানালে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়া থেকে পিছু হটবে ইরান।

এদিকে নানামুখী চাপে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল। খবর ছড়িয়েছে, ইসরায়েল আক্রান্ত হলে উপসাগরীয় দেশগুলোর ঘাঁটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু এতে আপত্তি এসেছে।

মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, উপসাগরীয় এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটি রয়েছে। এসব ঘাঁটি ইরানে হামলায় ব্যবহার হতে পারে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দেশগুলো আহ্বান জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যেন তাদের সীমানা ব্যবহার না করে।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে কয়েক সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে বদ্ধপরিকর ইরানের নেতারা। তবে ইরান যেন ইসরায়েলে হামলা না করে এ জন্য বারবার সতর্ক করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য কূটনৈতিক ও সামরিক তৎপরতাও চালাচ্ছে দেশটি।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আলুর দাম আরও বেড়েছে, স্বস্তি নেই ডিম-সবজিতেও

ইসরায়েলকে বাঁচাতে চীনের হাতে-পায়ে ধরে কান্নাকাটি যুক্তরাষ্ট্রের

প্রকাশিত সময় : ০৮:৫৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৪

ইরানের হামলা থেকে ইসরায়েলকে বাঁচাতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এর অংশ হিসেবে এবার চীনের দ্বারস্থ হলো দেশটি।

সিএনবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমা কূটনীতিকরা ইসরায়েলে ইরানের হামলা ঠেকাতে উঠেপড়ে লেগেছেন। তারা এ কাজে চীনকে ব্যবহার করতে চাইছেন। বিভিন্নভাবে চীনকে অনুরোধ করছেন, দেশটি যেন তেহরানকে হামলার ভয়বহতা সম্পর্কে বুঝিয়ে এ থেকে বিরত রাখে।

এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইসহ তুরস্ক ও সৌদি আরবের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এই সপ্তাহের শুরু থেকে দফায় দফায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কূটনীতিকদের সঙ্গে ইরান ইস্যুতে আলোচনা চলছে।

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বৃহস্পতিবার বলেছেন, ব্লিঙ্কেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বিশদ কথা বলেছেন। তিনি তাদের স্পষ্ট করতে বলেছেন, উত্তেজনা কারো স্বার্থে নয়। দেশগুলোর উচিত ইরানকে উত্তেজনা না বাড়াতে বুঝানো।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গত কয়েক দিন ধরে ইউরোপীয় মিত্র এবং অংশীদারদের সঙ্গে কথা বলছি। তাদেরও ইরানকে একটি স্পষ্ট বার্তা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছি। বার্তাটি হলো, উত্তেজনা ইরানের স্বার্থে নয়, এটি অঞ্চলের স্বার্থে নয় এবং এটি বিশ্বের স্বার্থেও নয়।’

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ আগামী সপ্তাহে চীন সফর করবেন। তিনিও ইরান ইস্যুতে বেইজিংয়ের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

চীন ব্রিকস জোটেরও সদস্য। রাশিয়া ও ইরানের তেল রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদারও দেশটি। উদীয়মান বাজারে ইরান প্রচ্ছন্নভাবে চীনের নেতৃত্ব মেনে চলে। তাই ইরানকে দমাতে চীনকে কার্যকর মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র।

চীনের দ্বারস্থ হওয়ার বিষয়টি নতুন নয়। এর আগেও লোহিত সাগরে ইরান-সমর্থিত হুথিদের আক্রমণের মুখে যুক্তরাষ্ট্র চীনকে এ ধরনের অনুরোধ করেছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন সময় স্বীকার করেছে, মার্কিনরা বারবার চাইলেও ইরানের ওপর চীনের কোনো ধরনের চাপ প্রয়োগের প্রমাণ তারা পাননি।

এবার যেহেতু পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাকর তাই চীনকে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজে লাগাতে পশ্চিমা কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে। আশা করা হচ্ছে, চীন আহ্বান জানালে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়া থেকে পিছু হটবে ইরান।

এদিকে নানামুখী চাপে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল। খবর ছড়িয়েছে, ইসরায়েল আক্রান্ত হলে উপসাগরীয় দেশগুলোর ঘাঁটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু এতে আপত্তি এসেছে।

মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, উপসাগরীয় এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটি রয়েছে। এসব ঘাঁটি ইরানে হামলায় ব্যবহার হতে পারে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দেশগুলো আহ্বান জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যেন তাদের সীমানা ব্যবহার না করে।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে কয়েক সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে বদ্ধপরিকর ইরানের নেতারা। তবে ইরান যেন ইসরায়েলে হামলা না করে এ জন্য বারবার সতর্ক করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য কূটনৈতিক ও সামরিক তৎপরতাও চালাচ্ছে দেশটি।