০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল দেখতে’ কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে মানুষের ভিড়

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ইতোমধ্যে ৯ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। রেমালের কারণে উত্তাল রয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪-৬ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। বিপদ সংকেত দেখাতে বলায় বালিয়াড়িতে টানানো হয়েছে লাল পতাকা। এমন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যেও সৈকতে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ দেখার জন্য ভিড় করছেন হাজারো মানুষ।

রোববার (২৬ মে) সকালে সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে ঢেউ দেখতে নামেন বহু মানুষ। পর্যটকদের পাশাপাশি ভিড় করছেন স্থানীয়রাও।

সৈকতে আসা ইয়াসমিন সুলতানা নামে এক নারী পর্যটক বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ দেখতে মেয়েকে নিয়ে কক্সবাজার এসেছি। এখন সাগর খুবই উত্তাল। দেখতে অনেক ভালো লাগছে। ছবি তুলছি, শামুক-ঝিনুক কুড়িয়েছি। আগে কক্সবাজার অনেক আসা হয়েছে। তবে এবার ঘূর্ণিঝড়ের সময় এসেছি। ঘূর্ণিঝড়ের সময় কক্সবাজার সাগর কেমন হয় তা দেখলাম।’

স্থানীয় বাসিন্দা ফয়েজ আহমেদ জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে ঢেউগুলো অনেক বড় দেখাচ্ছে। সামনে থেকে বড় বড় ঢেউগুলো দেখে আসলে ভয় কাজ করছে। তবে মজাও পাচ্ছি। বিষয়টি পর্যটকরাও বেশ ভালোই উপভোগ করছেন। তবে সকাল থেকে লাইফ গার্ড কর্মীরা নোনাজলে নামতে বাধা দিলেও তা উপেক্ষা করে অনেকে নামছেন। সবাই হাঁটুপানিতে নামলেও কেউ গভীরে যাচ্ছেন না।

সী সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার কর্মী জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে কক্সবাজারে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে। তাই সাগর উত্তাল রয়েছে। সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে টাঙানো হয়েছে লাল পতাকা। লাল পতাকা মানেই সতর্ক করা, যাতে কেউ সমুদ্রস্নানে না নামেন। আমরা কাউকে সৈকতে সমুদ্রে গোসল করতে নামতে দিচ্ছি না।’

‘রেমাল’ আঘাত হানতে পারে যেসব এলাকায়:
এদিকে আবহাওয়া অফিসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শনিবার মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড় রেমাল চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল।

সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আলুর দাম আরও বেড়েছে, স্বস্তি নেই ডিম-সবজিতেও

ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল দেখতে’ কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে মানুষের ভিড়

প্রকাশিত সময় : ০৬:৫৫:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ইতোমধ্যে ৯ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। রেমালের কারণে উত্তাল রয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪-৬ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। বিপদ সংকেত দেখাতে বলায় বালিয়াড়িতে টানানো হয়েছে লাল পতাকা। এমন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যেও সৈকতে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ দেখার জন্য ভিড় করছেন হাজারো মানুষ।

রোববার (২৬ মে) সকালে সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে ঢেউ দেখতে নামেন বহু মানুষ। পর্যটকদের পাশাপাশি ভিড় করছেন স্থানীয়রাও।

সৈকতে আসা ইয়াসমিন সুলতানা নামে এক নারী পর্যটক বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ দেখতে মেয়েকে নিয়ে কক্সবাজার এসেছি। এখন সাগর খুবই উত্তাল। দেখতে অনেক ভালো লাগছে। ছবি তুলছি, শামুক-ঝিনুক কুড়িয়েছি। আগে কক্সবাজার অনেক আসা হয়েছে। তবে এবার ঘূর্ণিঝড়ের সময় এসেছি। ঘূর্ণিঝড়ের সময় কক্সবাজার সাগর কেমন হয় তা দেখলাম।’

স্থানীয় বাসিন্দা ফয়েজ আহমেদ জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে ঢেউগুলো অনেক বড় দেখাচ্ছে। সামনে থেকে বড় বড় ঢেউগুলো দেখে আসলে ভয় কাজ করছে। তবে মজাও পাচ্ছি। বিষয়টি পর্যটকরাও বেশ ভালোই উপভোগ করছেন। তবে সকাল থেকে লাইফ গার্ড কর্মীরা নোনাজলে নামতে বাধা দিলেও তা উপেক্ষা করে অনেকে নামছেন। সবাই হাঁটুপানিতে নামলেও কেউ গভীরে যাচ্ছেন না।

সী সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার কর্মী জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে কক্সবাজারে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে। তাই সাগর উত্তাল রয়েছে। সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে টাঙানো হয়েছে লাল পতাকা। লাল পতাকা মানেই সতর্ক করা, যাতে কেউ সমুদ্রস্নানে না নামেন। আমরা কাউকে সৈকতে সমুদ্রে গোসল করতে নামতে দিচ্ছি না।’

‘রেমাল’ আঘাত হানতে পারে যেসব এলাকায়:
এদিকে আবহাওয়া অফিসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শনিবার মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড় রেমাল চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল।

সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।