০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উখিয়ার আশ্রয়শিবিরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে রোহিঙ্গা যুবক নিহত, নারীসহ গুলিবিদ্ধ ২

কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে একজন রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন একজন নারীসহ আরও দুই রোহিঙ্গা। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আশ্রয়শিবিরের পশ্চিম পাশের ডিআরসি মাঠের আশ্রয়শিবিরে এ ঘটনা ঘটে। শিবিরের রোহিঙ্গাদের অভিযোগ, মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সশস্ত্র সদস্যরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

নিহত রোহিঙ্গার নাম সিরাজুল ইসলাম ওরফে ফয়সাল (৩৭)। তিনি উখিয়ার ইরানি পাহাড় আশ্রয়শিবিরের এ ব্লকের রোহিঙ্গা লাল মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন একই ব্লকের রোহিঙ্গা মো. রফিকের স্ত্রী হাসিনা বেগম (৪০) ও আবুল হোসেনের ছেলে হাবিবুর রহমান (৩২)। গুলিবিদ্ধ দুজনকে উখিয়ার ক্যাম্প-৬ আশ্রয়শিবিরের বিডিআরসিএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে গভীর রাতে হাবিবুর রহমানকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। হাবিবের পায়ে এবং হাসিনার পিঠে গুলি লাগে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আজ বুধবার সকালে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সন্ত্রাসীদের গুলিতে ঘটনাস্থলে ফয়সালের মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সন্ত্রাসীদের ধরতে আশ্রয়শিবিরে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গুলিবিদ্ধ দুজনের একজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এবং আরেকজনকে আশ্রয়শিবিরের আরেকটি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতারা জানান, গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে আরএসওর ১২-১৫ জনের একটি সশস্ত্র দল কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে গিয়ে রাখাইনে যুদ্ধে অংশ নিতে সদস্য সংগ্রহ শুরু করে। এ সময় সাধারণ রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসীদের ঘিরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে আরএসওর সদস্যরাও এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। তাতে তিন রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হন। একপর্যায়ে আরএসওর সদস্যরা ইরানি ক্যাম্পের পাশের পাহাড়ে আত্মগোপন করে।

কয়েকজন রোহিঙ্গা জানান, গত সাত দিনে আরএসওর সদস্যরা আশ্রয়শিবির থেকে শতাধিক রোহিঙ্গা পুরুষকে জোর করে মিয়ানমারে পাঠিয়েছে সেখানকার (মিয়ানমার) সেনাবাহিনীর পক্ষে যুদ্ধ করতে। শুরুর দিকে কিছু রোহিঙ্গা তরুণ যুবক যেতে রাজি হলেও আরাকান আর্মির গুলিতে কয়েকজন রোহিঙ্গার মৃত্যুর খবরে এখন কেউ যেতে রাজি হচ্ছেন না। কয়েক দিন ধরে আরএসও আশ্রয়শিবির থেকে জোরপূর্বক রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে পাঠানোর চেষ্টা করছে। কয়েক দিন ধরে আরএসওর সদস্যদের সঙ্গে সাধারণ রোহিঙ্গার কয়েক দফায় গোলাগুলি ও মারামারির ঘটনা ঘটছে।

পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, ২২ মে সকালে উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-৪) সন্ত্রাসীদের গুলিতে আরও চারজন রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হন। ২৫ মে উখিয়ার লম্বাশিয়া আশ্রয়শিবিরে আরএসওর সঙ্গে সাধারণ রোহিঙ্গার সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হন।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আলুর দাম আরও বেড়েছে, স্বস্তি নেই ডিম-সবজিতেও

উখিয়ার আশ্রয়শিবিরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে রোহিঙ্গা যুবক নিহত, নারীসহ গুলিবিদ্ধ ২

প্রকাশিত সময় : ০৯:৫৮:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ মে ২০২৪

কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে একজন রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন একজন নারীসহ আরও দুই রোহিঙ্গা। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আশ্রয়শিবিরের পশ্চিম পাশের ডিআরসি মাঠের আশ্রয়শিবিরে এ ঘটনা ঘটে। শিবিরের রোহিঙ্গাদের অভিযোগ, মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সশস্ত্র সদস্যরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

নিহত রোহিঙ্গার নাম সিরাজুল ইসলাম ওরফে ফয়সাল (৩৭)। তিনি উখিয়ার ইরানি পাহাড় আশ্রয়শিবিরের এ ব্লকের রোহিঙ্গা লাল মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন একই ব্লকের রোহিঙ্গা মো. রফিকের স্ত্রী হাসিনা বেগম (৪০) ও আবুল হোসেনের ছেলে হাবিবুর রহমান (৩২)। গুলিবিদ্ধ দুজনকে উখিয়ার ক্যাম্প-৬ আশ্রয়শিবিরের বিডিআরসিএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে গভীর রাতে হাবিবুর রহমানকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। হাবিবের পায়ে এবং হাসিনার পিঠে গুলি লাগে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আজ বুধবার সকালে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সন্ত্রাসীদের গুলিতে ঘটনাস্থলে ফয়সালের মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সন্ত্রাসীদের ধরতে আশ্রয়শিবিরে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গুলিবিদ্ধ দুজনের একজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এবং আরেকজনকে আশ্রয়শিবিরের আরেকটি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতারা জানান, গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে আরএসওর ১২-১৫ জনের একটি সশস্ত্র দল কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে গিয়ে রাখাইনে যুদ্ধে অংশ নিতে সদস্য সংগ্রহ শুরু করে। এ সময় সাধারণ রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসীদের ঘিরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে আরএসওর সদস্যরাও এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। তাতে তিন রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হন। একপর্যায়ে আরএসওর সদস্যরা ইরানি ক্যাম্পের পাশের পাহাড়ে আত্মগোপন করে।

কয়েকজন রোহিঙ্গা জানান, গত সাত দিনে আরএসওর সদস্যরা আশ্রয়শিবির থেকে শতাধিক রোহিঙ্গা পুরুষকে জোর করে মিয়ানমারে পাঠিয়েছে সেখানকার (মিয়ানমার) সেনাবাহিনীর পক্ষে যুদ্ধ করতে। শুরুর দিকে কিছু রোহিঙ্গা তরুণ যুবক যেতে রাজি হলেও আরাকান আর্মির গুলিতে কয়েকজন রোহিঙ্গার মৃত্যুর খবরে এখন কেউ যেতে রাজি হচ্ছেন না। কয়েক দিন ধরে আরএসও আশ্রয়শিবির থেকে জোরপূর্বক রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে পাঠানোর চেষ্টা করছে। কয়েক দিন ধরে আরএসওর সদস্যদের সঙ্গে সাধারণ রোহিঙ্গার কয়েক দফায় গোলাগুলি ও মারামারির ঘটনা ঘটছে।

পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, ২২ মে সকালে উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-৪) সন্ত্রাসীদের গুলিতে আরও চারজন রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হন। ২৫ মে উখিয়ার লম্বাশিয়া আশ্রয়শিবিরে আরএসওর সঙ্গে সাধারণ রোহিঙ্গার সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হন।