০৫:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসরায়েলের ‘সর্বাত্মক যুদ্ধের’ হুমকির জবাবে হিজবুল্লাহ প্রধানের পাল্টা হুঁশিয়ারি

লেবাননের ইরানপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেছেন, লেবাননের বিরুদ্ধে বড় ধরনের ইসরায়েলি আক্রমণের ঘটনায় এমন যুদ্ধ শুরু হবে, যেটিতে কোনও সংযম, কোনও নিয়ম ও কোনও সীমা থাকবে না। বুধবার (১৯ জুন) এক ভাষণে তিনি এই হুমকি দেন। লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে হিজবুল্লাহের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত বলে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের হুমকির পর তিনি এই ভাষণ দিলেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

ভাষণে হিজবুল্লাহ প্রধান বলেছেন, লেবাননে একটি যুদ্ধের বিষয়ে শত্রুরা যা বলছে, মধ্যস্থতাকারীরা যেসব হুমকি ও সতর্কবার্তা দিচ্ছেন এবং ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে যা বলা হচ্ছে– তা আমাদের ভীত করছে না। ভয় পাওয়া উচিত ইসরায়েলের।

হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সামরিক সক্ষমতার কথা তুলে ধরে নাসরাল্লাহ বলেছেন, তারা নতুন অস্ত্র সংগ্রহ করেছে এবং স্থানীয়ভাবে ড্রোন উৎপাদন করছে।

তিনি বলেন, শত্রুরা ভালো করেই জানে যে সবচেয়ে কঠিন দিনের জন্য আমরা নিজেদের প্রস্তুত করেছি। শত্রুরা ভালো করেই জানে যে কী অপেক্ষা করছে এবং এতদিন হামলা না করার এটিই কারণ। তারা জানে যে দেশটির কোনও অংশ আমাদের রকেট ও ড্রোন থেকে রেহাই পাবে না। এটি কোনও নির্বিচার বোমাবর্ষণ হবে না, প্রতিটি রকেট একটি নিশানায় আঘাত করবে।

নাসরাল্লাহ ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে পদাতিক যোদ্ধা পাঠাতে পারে হিজবুল্লাহ। তিনি বলেছেন, শত্রুদের অনেক ভয় কাজ করছে। তারা মনে করছে প্রতিরোধ গোষ্ঠী উত্তর ইসরায়েল দখল করতে পারে। লেবাননের ওপর কোনও যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হলে এটি একটি সম্ভাবনা হিসেবে হাজির থাকবে।

৭ অক্টোবর গাজায় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে নিয়মিত গোলাবর্ষণ ও রকেট হামলা চালিয়ে আসছে হিজবুল্লাহ। নিয়মিত পাল্টা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে প্রায় ৩০০ হিজবুল্লাহ যোদ্ধা ও ৭০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আর ইসরায়েল বলেছে, হিজবুল্লাহর হামলায় তাদের ১৫ সেনা ও ১০ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। চলমান পাল্টাপাল্টি হামলা বৃহত্তর সংঘাতে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

হিজবুল্লাহ হাইফা শহরে নজরদারির ফুটেজ প্রকাশের পর গোষ্ঠীটির সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। মঙ্গলবার তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, শিগগিরই একটি সর্বাত্মক যুদ্ধের সিদ্ধান্ত আসছে। এমনকি উত্তেজনা এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টাও এতে কোনও প্রভাব ফেলবে না।

তিনি আরও বলেছেন, ‘একটি সর্বাত্মক যুদ্ধে হিজবুল্লাহকে ধ্বংস এবং লেবাননকে নাস্তানাবুদ করা হবে।’ একই দিনে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর উত্তরাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রধান মেজর জেনারেল ওরি গর্ডিন ও অপারেশন ডিরেক্টরেটের প্রধান মেজর জেনারেল ওদেদ বাসিয়ুক লেবাননে আক্রমণের যুদ্ধ পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।

ইসরায়েল ইতোমধ্যে সতর্ক করে বলেছে, ৭ অক্টোবরের নৃশংসতার পর সীমান্ত এলাকায় হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর উপস্থিতি তারা সহ্য করবে না। কূটনৈতিক সমাধান না হলে হিজবুল্লাহকে লেবাননের আরও গভীরে ঠেলে দেওয়ার জন্য সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আলুর দাম আরও বেড়েছে, স্বস্তি নেই ডিম-সবজিতেও

ইসরায়েলের ‘সর্বাত্মক যুদ্ধের’ হুমকির জবাবে হিজবুল্লাহ প্রধানের পাল্টা হুঁশিয়ারি

প্রকাশিত সময় : ০৪:০০:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪

লেবাননের ইরানপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেছেন, লেবাননের বিরুদ্ধে বড় ধরনের ইসরায়েলি আক্রমণের ঘটনায় এমন যুদ্ধ শুরু হবে, যেটিতে কোনও সংযম, কোনও নিয়ম ও কোনও সীমা থাকবে না। বুধবার (১৯ জুন) এক ভাষণে তিনি এই হুমকি দেন। লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে হিজবুল্লাহের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত বলে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের হুমকির পর তিনি এই ভাষণ দিলেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

ভাষণে হিজবুল্লাহ প্রধান বলেছেন, লেবাননে একটি যুদ্ধের বিষয়ে শত্রুরা যা বলছে, মধ্যস্থতাকারীরা যেসব হুমকি ও সতর্কবার্তা দিচ্ছেন এবং ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে যা বলা হচ্ছে– তা আমাদের ভীত করছে না। ভয় পাওয়া উচিত ইসরায়েলের।

হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সামরিক সক্ষমতার কথা তুলে ধরে নাসরাল্লাহ বলেছেন, তারা নতুন অস্ত্র সংগ্রহ করেছে এবং স্থানীয়ভাবে ড্রোন উৎপাদন করছে।

তিনি বলেন, শত্রুরা ভালো করেই জানে যে সবচেয়ে কঠিন দিনের জন্য আমরা নিজেদের প্রস্তুত করেছি। শত্রুরা ভালো করেই জানে যে কী অপেক্ষা করছে এবং এতদিন হামলা না করার এটিই কারণ। তারা জানে যে দেশটির কোনও অংশ আমাদের রকেট ও ড্রোন থেকে রেহাই পাবে না। এটি কোনও নির্বিচার বোমাবর্ষণ হবে না, প্রতিটি রকেট একটি নিশানায় আঘাত করবে।

নাসরাল্লাহ ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে পদাতিক যোদ্ধা পাঠাতে পারে হিজবুল্লাহ। তিনি বলেছেন, শত্রুদের অনেক ভয় কাজ করছে। তারা মনে করছে প্রতিরোধ গোষ্ঠী উত্তর ইসরায়েল দখল করতে পারে। লেবাননের ওপর কোনও যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হলে এটি একটি সম্ভাবনা হিসেবে হাজির থাকবে।

৭ অক্টোবর গাজায় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে নিয়মিত গোলাবর্ষণ ও রকেট হামলা চালিয়ে আসছে হিজবুল্লাহ। নিয়মিত পাল্টা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে প্রায় ৩০০ হিজবুল্লাহ যোদ্ধা ও ৭০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আর ইসরায়েল বলেছে, হিজবুল্লাহর হামলায় তাদের ১৫ সেনা ও ১০ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। চলমান পাল্টাপাল্টি হামলা বৃহত্তর সংঘাতে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

হিজবুল্লাহ হাইফা শহরে নজরদারির ফুটেজ প্রকাশের পর গোষ্ঠীটির সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। মঙ্গলবার তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, শিগগিরই একটি সর্বাত্মক যুদ্ধের সিদ্ধান্ত আসছে। এমনকি উত্তেজনা এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টাও এতে কোনও প্রভাব ফেলবে না।

তিনি আরও বলেছেন, ‘একটি সর্বাত্মক যুদ্ধে হিজবুল্লাহকে ধ্বংস এবং লেবাননকে নাস্তানাবুদ করা হবে।’ একই দিনে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর উত্তরাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রধান মেজর জেনারেল ওরি গর্ডিন ও অপারেশন ডিরেক্টরেটের প্রধান মেজর জেনারেল ওদেদ বাসিয়ুক লেবাননে আক্রমণের যুদ্ধ পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।

ইসরায়েল ইতোমধ্যে সতর্ক করে বলেছে, ৭ অক্টোবরের নৃশংসতার পর সীমান্ত এলাকায় হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর উপস্থিতি তারা সহ্য করবে না। কূটনৈতিক সমাধান না হলে হিজবুল্লাহকে লেবাননের আরও গভীরে ঠেলে দেওয়ার জন্য সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।