ইসরায়েলের একটি বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালানোর দাবি করেছে ইয়েমেনভিত্তিক হুথি বিদ্রোহীরা। তারা জানিয়েছে, ইসরায়েলি বন্দরে একটি বাণিজ্যিক জাহাজেহামলা চালানো হয়েছে। হুথি বাহিনীর সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি শনিবার টেলিভিশনে এক ঘোষণায় বলেন, আরব সাগরে লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী বাল্ক ক্যারিয়ার ট্রান্সওয়ার্ল্ড নেভিগেটরে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা হামলা চালানো হয়েছে। খবর আল জাজিরার।
জাহাজটিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল কারণ এর মালিকানাধীন কোম্পানি অধিকৃত ফিলিস্তিন বন্দরে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করেছে। ইসরায়েলি বন্দরে প্রবেশ করা সব জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে এমন হুমকি আগেই দেওয়া হয়েছিল। আগের হুমকির ইঙ্গিত করে ইয়াহিয়া সারি জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের কারণেই ওই জাহাজে হামলা চালানো হয়েছে।
চলতি সপ্তাহেই এমভি টিউটর নামে একটি জাহাজ ডুবে যায়। এবার গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক এ পথে নতুন করে হামলার ঘটনা ঘটল।
ইয়াহিয়া সারি আরও দাবি করেছেন যে, ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইউএসএস এইসেনহাওয়ারে হামলা চালানো হয়েছে। গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই মার্কিন নৌবাহিনী ওই জাহাজটিকে এই অঞ্চলে নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ না দিয়ে সারি বলেন, তাদের অপারেশনটি সফলভাবে লক্ষ্য অর্জন করেছে। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, হুথিদের এই দাবি সঠিক নয়।
মার্কিন ওই কর্মকর্তা বলছেন, হুথি এবং সামাজিক মাধ্যমে তাদের সমর্থনকারী বিভিন্ন অ্যাকাউন্টগুলো থেকে বারবার মিথ্যা দাবি করা হচ্ছে যে, লোহিত সাগরে মার্কিন বিমানবাহী রণতরীটিকে আঘাত করা হয়েছে। এমনকি ওই রণতরীটি ডুবিয়ে দেওয়ার মিথ্যা দাবিও করা হয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা ইউএসএস এইসেনহাওয়ারকে আট মাসেরও বেশি সময় মোতায়েন করার পর দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়ার পরপরই হামলার খবর সামনে এলো।
ইউনাইটেড কিংডম মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস (ইউকেএমটিও) শুক্রবার জানিয়েছে যে, ইয়েমেনের এডেন থেকে ১২৬ নটিক্যাল মাইল (২৩৩ কিলোমিটার) পূর্বে একটি জাহাজে হামলা চালানো হয়েছে। ওই জাহাজের আশেপাশে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে এবং ক্রুরা নিরাপদ আছেন।
এদিকে হুথিরা তাদের সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তারা বলছে, ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে তারা হামলা চালিয়ে যাবে। গাজার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নেওয়া হলেই হামলা বন্ধ হবে।
গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে হুথিরা ৬০বারের বেশি হামলা চালিয়েছে। দুটি বাণিজ্যিক জাহাজ ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং একটি জাহাজ দখল করা হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েক ডজন জাহাজ হামলার শিকার হয়েছে।