০৪:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজারে দ্রুতগামী ট্রেন চলাচলের উপযোগী করা হচ্ছে

* প্রথমবারের মতো একসাথে ট্রেন ও পথচারী পারাপার

* কালুরঘাট সেতু । সেতু নির্মাণের ৯৩ বছর পর নির্মিত হলো ওয়াকওয়ে । যান চলাচল জুলাই-আগস্টে

কালুরঘাট সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেনের পাশাপাশি প্রথমবারের মতো ওয়াকওয়ে দিয়ে হেঁটে পার হচ্ছেন পথচারীরা। ১৯৩০ সালে কর্ণফুলী নদীর উপর নির্মিত কালুরঘাট সেতুটির বর্তমান বয়স ৯৪ বছর চলছে। সেতু নির্মাণের ৯৩ বছর পর রেল কর্তৃপক্ষ সেতুর উপর দিয়ে পথচারী পারাপারের জন্য নির্মাণ করেছে ওয়াকওয়ে।

এখন সেতুর উপর দিয়ে ট্রেনের পাশাপাশি একসাথে ওয়াকওয়ে দিয়ে পথচারীরাও পায়ে হেঁটে পার হচ্ছেন। সেতুর সংস্কার কাজ পুরোপুরি শেষ না হলেও ঈদের আগে থেকে ওয়াকওয়ে দিয়ে উভয় পাড়ের মানুষ চলাচল করছে। রেলওয়ের প্রকৌশলীরা জানান, প্রায় ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বুয়েট প্রকৌশলীদের পরামর্শে সংস্কার করা হচ্ছে কালুরঘাট সেতু। সংস্কারের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সংস্কারের প্রথম ধাপ শেষ করে গত বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে কক্সবাজারগামী ট্রেন চলাচল শুরু হয়। যানবাহন চলাচল ও পথচারী চলাচলের জন্য ওয়াকওয়ে নির্মাণ করতে সময় লাগে দীর্ঘদিন। কালুরঘাট রেল সেতু যানবাহন ও পথচারী চলাচলের জন্য প্রস্তুত হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্ত। আগামী জুলাই–আগস্টে সেতুর উপর দিয়ে যানবাহনও চলাচল করতে পারবে বলে জানা গেছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালে সেতুটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। ২০১১ সালে বুয়েটের একদল গবেষক আরেকবার ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছিলেন সেতুটি। বর্তমানে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দলের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে সেতুটি দিয়ে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে দ্রুতগামী ট্রেন চলাচল (নতুন সেতু নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত ট্রেন ও যানবাহন চলাচলের জন্য) করতে পারার মতো নতুন করে সংস্কার করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞ টিমের তত্ত্বাবধানে সেতুটির সংস্কার কাজ করছে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। সেতুটিকে নতুনভাবে সংস্কার করে কক্সবাজার রুটে আধুনিক উচ্চগতির ট্রেন চলাচল উপযোগী করে তোলার জন্য বুয়েটকে ৮ কোটি টাকায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। গত বছরের ১ আগস্ট থেকে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ টিমের তত্ত্বাবধানে কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজ শুরু হয়। সেতুটি নতুন করে সংস্কারের জন্য গত বছরের ১৮ জুন রেলওয়ের সাথে ম্যাঙ ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। প্রথম দফায় গত বছরের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সেতুর সংস্কার কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে সংস্কার কাজ শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ পর্যন্ত বেশ কয়েক দফা পেছানো হয় সেতুটির সংস্কার কাজ। তবে সংস্কারের প্রথম ধাপ শেষ করে গত বছরের ১ ডিসেম্বর পর্যটন নগরী কঙবাজার রুটে প্রথমবারের মতো যাত্রীবাহী (কঙবাজার এঙপ্রেস) ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এর আগে গত বছরের ১১ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে দোহাজারী–কঙবাজার রেললাইন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে ৫ নভেম্বর সংস্কাররত কালুরঘাট সেতু দিয়ে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম থেকে ট্রায়াল রানের ট্রেন কঙবাজার যায়।

উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালে কর্ণফুলী নদীর উপর ব্রুনিক অ্যান্ড কোম্পানি সেতু বিল্ডার্স হাওড়া নামে একটি প্রতিষ্ঠান সেতুটি নির্মাণ করে। মূলত ট্রেন চলাচলের জন্য সেতুটি সেই বছরের ৪ জুন উদ্বোধন করা হয়। পরে ১৯৫৮ সালে সবরকম যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে সেতুটির বর্তমান রূপ দেওয়া হয়। সেতুটিতে রয়েছে ২টি এবাটমেন্ট, ৬টি ব্রিক পিলার, ১২টি স্টিল পিলার ও ১৯টি স্প্যান। সেতুটির দৈর্ঘ্য ২৩৯ মিটার।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

‘স্টেপ ডাউন ইউনুস’পোস্ট করে আটক হলেন যুবক!

কক্সবাজারে দ্রুতগামী ট্রেন চলাচলের উপযোগী করা হচ্ছে

প্রকাশিত সময় : ০৭:০৩:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪

* প্রথমবারের মতো একসাথে ট্রেন ও পথচারী পারাপার

* কালুরঘাট সেতু । সেতু নির্মাণের ৯৩ বছর পর নির্মিত হলো ওয়াকওয়ে । যান চলাচল জুলাই-আগস্টে

কালুরঘাট সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেনের পাশাপাশি প্রথমবারের মতো ওয়াকওয়ে দিয়ে হেঁটে পার হচ্ছেন পথচারীরা। ১৯৩০ সালে কর্ণফুলী নদীর উপর নির্মিত কালুরঘাট সেতুটির বর্তমান বয়স ৯৪ বছর চলছে। সেতু নির্মাণের ৯৩ বছর পর রেল কর্তৃপক্ষ সেতুর উপর দিয়ে পথচারী পারাপারের জন্য নির্মাণ করেছে ওয়াকওয়ে।

এখন সেতুর উপর দিয়ে ট্রেনের পাশাপাশি একসাথে ওয়াকওয়ে দিয়ে পথচারীরাও পায়ে হেঁটে পার হচ্ছেন। সেতুর সংস্কার কাজ পুরোপুরি শেষ না হলেও ঈদের আগে থেকে ওয়াকওয়ে দিয়ে উভয় পাড়ের মানুষ চলাচল করছে। রেলওয়ের প্রকৌশলীরা জানান, প্রায় ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বুয়েট প্রকৌশলীদের পরামর্শে সংস্কার করা হচ্ছে কালুরঘাট সেতু। সংস্কারের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সংস্কারের প্রথম ধাপ শেষ করে গত বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে কক্সবাজারগামী ট্রেন চলাচল শুরু হয়। যানবাহন চলাচল ও পথচারী চলাচলের জন্য ওয়াকওয়ে নির্মাণ করতে সময় লাগে দীর্ঘদিন। কালুরঘাট রেল সেতু যানবাহন ও পথচারী চলাচলের জন্য প্রস্তুত হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্ত। আগামী জুলাই–আগস্টে সেতুর উপর দিয়ে যানবাহনও চলাচল করতে পারবে বলে জানা গেছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালে সেতুটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। ২০১১ সালে বুয়েটের একদল গবেষক আরেকবার ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছিলেন সেতুটি। বর্তমানে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দলের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে সেতুটি দিয়ে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে দ্রুতগামী ট্রেন চলাচল (নতুন সেতু নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত ট্রেন ও যানবাহন চলাচলের জন্য) করতে পারার মতো নতুন করে সংস্কার করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞ টিমের তত্ত্বাবধানে সেতুটির সংস্কার কাজ করছে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। সেতুটিকে নতুনভাবে সংস্কার করে কক্সবাজার রুটে আধুনিক উচ্চগতির ট্রেন চলাচল উপযোগী করে তোলার জন্য বুয়েটকে ৮ কোটি টাকায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। গত বছরের ১ আগস্ট থেকে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ টিমের তত্ত্বাবধানে কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজ শুরু হয়। সেতুটি নতুন করে সংস্কারের জন্য গত বছরের ১৮ জুন রেলওয়ের সাথে ম্যাঙ ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। প্রথম দফায় গত বছরের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সেতুর সংস্কার কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে সংস্কার কাজ শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ পর্যন্ত বেশ কয়েক দফা পেছানো হয় সেতুটির সংস্কার কাজ। তবে সংস্কারের প্রথম ধাপ শেষ করে গত বছরের ১ ডিসেম্বর পর্যটন নগরী কঙবাজার রুটে প্রথমবারের মতো যাত্রীবাহী (কঙবাজার এঙপ্রেস) ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এর আগে গত বছরের ১১ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে দোহাজারী–কঙবাজার রেললাইন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে ৫ নভেম্বর সংস্কাররত কালুরঘাট সেতু দিয়ে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম থেকে ট্রায়াল রানের ট্রেন কঙবাজার যায়।

উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালে কর্ণফুলী নদীর উপর ব্রুনিক অ্যান্ড কোম্পানি সেতু বিল্ডার্স হাওড়া নামে একটি প্রতিষ্ঠান সেতুটি নির্মাণ করে। মূলত ট্রেন চলাচলের জন্য সেতুটি সেই বছরের ৪ জুন উদ্বোধন করা হয়। পরে ১৯৫৮ সালে সবরকম যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে সেতুটির বর্তমান রূপ দেওয়া হয়। সেতুটিতে রয়েছে ২টি এবাটমেন্ট, ৬টি ব্রিক পিলার, ১২টি স্টিল পিলার ও ১৯টি স্প্যান। সেতুটির দৈর্ঘ্য ২৩৯ মিটার।