কক্সবাজার শহরের সুপরিচিত সংবাদকর্মী ফরহাদের বসতভিটা দখলে নেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মালমায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে।
তিনি জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম বির্বাতার কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি ও স্থানীয় দৈনিক আজকের দেশবিদেশ, দৈনিক রুপালী সৈকত প্রত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ও চীফ কম্পিউটার ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত।
এছাড়াও তিনি কক্সবাজারের স্থানীয় দৈনিক ইনানী, দৈনিক গণসংযোগ, দৈনিক চকোরী, দৈনিক কক্সবাজার বাণী, দৈনিক আমাদের কক্সবাজার পত্রিকায় দীর্ঘদিন মেকআপ (নিউজপেপার ডিজাইন) ও সংবাদকর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
জানা গেছে, ফরহাদের সাথে শহরের ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ ডিককুল এলাকার প্রবাসী ইয়াকুব আলীর স্ত্রী অজুফা বেগম(৩০) ও তার আত্মীয় জয়নালের(৩৭) পরিবারের সাথে দীর্ঘদিন ধরে সীমানা সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার বিচার মিমাংসাও করা হয়।
কোন ভাবেই জমি গ্রাস করতে না পেরে অজুফা বেগম ও জয়নালের পরিবার মিলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(৪)/(খ) ধারায় সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট একটি মামলা করেন সদর মডেল থানায়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৪ মে (শুক্রবার) রাত ১১টার সময় অজুফা বেগমের বাড়িতে ঢুকে ধর্ষনের চেষ্টা করেন তিনি। অথচ সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে ঐদিন রাত ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত দৈনিক আজকের দেশবিদেশ প্রত্রিকা অফিসে তাঁর নিয়মিত কাজে ব্যস্ত ছিলেন তিনি।
এদিকে কোনোরকম তদন্ত না করেই সদর থানায় এধরনের মিথ্যা মামলা রুজু করায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে সচেতনমহলের মাঝে।
মামলার বাদী অজুফা বেগমের ভাসুর শাহজাহান ও তার স্ত্রী বুলবুল আক্তার বলেন, ঐ মহিলা আমাদের আত্মীয় হলেও অত্যন্ত খারাপ, দুশ্চরিত্রা। স্বামী বিদেশে থাকায় স্বামীকে ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করে।
এ কাজে বাঁধা দিলে আমাদের মামলার হুমকিসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি দেখায়, তার বাড়ি আর আমার বাড়ি একই দেওয়াল ঘেঁষে। এ ধরণের ঘটনা যদি ঘটে থাকে তাহলে সবার আগে আমি শুনতাম। এখানে এধরণের কোন ঘটনা ঘটেনি। নিশ্চয়ই তার উদ্দেশ্য হাশিল করার জন্যই এই ধরনের মিথ্যা, বানোয়াট মামলা করেছে।
প্রতিবেশী ইমরান বলেন, এরকম দুশ্চরিত্রা মহিলাকে জোর করে ধর্ষণ করতে হয় না। সে নিজে পুরুষ ডেকে আনে অনৈতিক কাজ করার জন্য। গতকাল তদন্তে পুলিশ আসছিলো তাদেরও আমি একথা স্পষ্ট বলেছি। ওই মহিলার চরিত্রের বিষয়ে এলাকার সবাই জানে।
প্রতিবেশী জুরা বেগম বলেন, আমাদের এলাকায় এধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। ওই মহিলার চরিত্র খারাপ হওয়ায় তার শ্বশুরবাড়িতে প্রায় সময় সামাজিকভাবে তার নামে বিচার-সালিশ বসতে দেখা যায়।
দক্ষিণ ডিককুল এলাকার বাইতুল লতিফ জামে মসজিদের সভাপতি সালাম বলেন, আমাদের এলাকায় এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নিরীহ ছেলেটিকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
ফরহাদের পিতা রুহুল কাদের জানায়, সীমানা বিরোধের জেরে আমার বসতভিটা দখলে নেওয়ার জন্য ছেলেকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। ওই মহিলা ছেলেদের ছবি পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেল করে টাকা হাতিয়ে নেয়। আজ থেকে চার বছর আগেও আমার পরিবারকে মামলার হুমকি দিয়ে পঞ্চাশ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এখন মিথ্যা মামলা দিয়ে আপোষের কথা বলে স্থানীয় দালালের মাধ্যমে মোটা অংকের চাঁদা দাবী করে। এছাড়া পুরো পরিবারকে হত্যা করে লাশ ঘুম করে ভিটা দখলে নিবে বলে হুমকি দিচ্ছে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে।
এসব বিষয়ে আমি থানায় অভিযোগ করেছি। ২৩ জুন (বৃহস্পতিবার) তদন্তে পুলিশ আসছিলো ওই মহিলার বিরুদ্ধে এলাকার সবাই সাক্ষী দিয়েছে।
এ বিষয়ে ফরহাদ বলেন, ওই মহিলার উদ্দেশ্য হাসিল করতে না পেরে আমাকে সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভানোয়াট, ভিত্তিহীন একটা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। প্রতিদিন রাতে আমি পত্রিকা অফিসে কাজ করি। এজাহারে যে ঘটনার সময় উল্লেখ করছে ওই সময়ও আমি দেশবিদেশ পত্রিকা অফিসে আমার নিয়মিত কাজ করছিলাম। এরকম আজগবি, গায়েবি মামলায় আমি হতবাক।
সদর থানার এ.এস.আই খোকন বডুয়া জানায়, গত ১৬ জুন রুহুল কাদের বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ করেছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে ২৪ জুন আমি এ এলাকায় গিয়েছিলাম, এলাকার লোকজনের সাতে কথা বলেছি এবং বিষয়টি ওসি স্যারকে জানিয়েছি। এ বিষয়ে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এদিকে সংবাদকর্মী ফরহাদকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা। সেসাথে দ্রুত ঘটনার সুষ্ট তদন্তপূর্বক মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান।