উখিয়া সদর দারোগা বাজারের দক্ষিণের বাজার হলো রোহিঙ্গা অধ্যুষিত কুতুপালং বাজার। এই বাজারে স্থানীয়দের পাশাপাশি প্রতিদিন প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা বাজার করেন। এমন কোনো পণ্য নেই যা কুতুপালং বাজারে পাওয়া যাবে না। হঠৎ করে পুরো উখিয়ায় বিভিন্ন বাজারে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। সিন্ডিকেটের কারসাজিতে লাগামহীন হয়ে পড়েছে বাজার। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। উখিয়া সদর দারোগা বাজারে বাজার করতে আসা জানে আলম বলেন, বাজার করতে এসে জান শেষ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আমাদের মতো সাধারণ মানুষের বাজার করে খেয়ে বেচে থাকা কষ্টকর।
এক কেজি পেয়াজ ১১০ টাকা, এক ডজন ডিম ১৫০ টাকা, কচু ১০০ টাকা, মশুর ডাল ১৫০ টাকা, এক সপ্তাহে সর্বোচ্চ বেড়েছে মাছ, ডিম, শাকসবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ প্রায় সব ভোগ্যপণ্যের দাম। বিশেষ করে পেয়াজের বাজারে ভয়াবহ অস্থিরতা। কেজিতে দাম বেড়েছে ৩০ টাকা। এখন মাছ-মাংসের দাম বেশি, এমন সময় নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের ভরসা ডিম। তবে এই পণ্যের দামও বেড়ে যাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। কুতুপালং বাজারে বাজার করতে এসেছেন প্রবীণ মুরব্বি বাদশা মিয়া। তিনি জানালেন, একজন রোহিঙ্গা একটা একটা ডিম কিনলেও ৫ লাখ ডিম বিক্রি হয়ে যাবে।
বুঝাতে চাচ্ছি এখানে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা এসে বাজার করেন। এরা তাদের চাহিদা মতো বাজার করলে বাজারে আর থাকে কি? আমরা স্থানীয় অসহায় গরিবের অবস্থা কাহিল। ব্যবসায়ীরা ২০, ২১ সালে দাম বাড়িয়েছে করোনার কথা বলে, ২২ সালে দাম বাড়িয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধের কথা বলে। ঐ থেকে দাম বাড়া আর কমেনি। এখন দাম বাড়িয়েছে সিলেটে বন্যার কথা বলে। আমাদের সাধারণ মানুষের আয় বাড়ে কখন? আমরা কিভাবে চলি কেউ কি চিন্তা করেন।
আমাদের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে। শাকসবজি, মাছ, মাংস, ও তরিতরকারির দাম ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বন্যার কারণে প্রায় সব ধরণের শাকসবজি, পেয়াজ, রসুন, মাছ, মুরগি, মাংসসসহ অণন্যানন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অনেক বেড়েছে। এছাড়াও সুখবর নেই সব ধরনের মসলার বাজারেও। উখিয়া দারোগা বাজারের হামিদ স্টোরের দোকানদার মিজান বলেন, গত দুদিন আগেও পেয়াজের দাম ছিল ৭০ টাকা, আজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। কুতুপাললং বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগি ও সোনালী মুরগির দাম গত সপ্তাহের ব্যবধধানে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। প্রতিকেজি ব্যয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়।
সোনালী মুরগি ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি প্রতিকেজি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায় টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়।তালাপোয়া মাছ ছাড়া কোন মাছ ৫০০ থেকে ৮০০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। চাল, আটা, দুধ, সয়াবিন, সুগন্ধি চালসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দারোগা বাজার, কুতুপালং বাজার ও কোটবাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া যায়।