০৭:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের র‌্যাবে অভিযানে বিপুল পরিমাণ  অস্ত্র ও গোলা-বারুদসহ ৫ জন আরসা সন্ত্রাসী আটক

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বিশেষ করে আরসা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আতঙ্ক সৃষ্টি, হামলা, খুন, অপহরণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে থাকে। এরই প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১৫ গত ২০২৩ সালে ৯৪ জন এবং ২০২৪ সালে ২৪ জন আরসা সদস্য মোট ১১৮ জন আরসা সন্ত্রাসীকে ৭১টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়। সম্প্রতি মোছারখোলা, উনচিপ্রাং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকাগুলোতে অপহরণের মাত্রা বেড়ে যায়। তাছাড়া বিভিন্ন ক্যাম্পে হত্যাকান্ডের সংখ্যাও বাড়তে থাকে ফলে ক্যাম্পসমূহে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাতে র‌্যাব-১৫, এর অভিযানকালে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫ এ সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার একদল সদস্য বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ ক্যাম্পে নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১৫ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল অদ্য ১১ জুলাই ২০২৪ তারিখ আনুমানিক ভোরবেলা ০৪.৩০ ঘটিকায় ১৫নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মোছারখোলা নামক স্থানে একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে র‌্যাব আভিযানিক দল কর্তৃক সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার ০৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী ০৬টি আগ্নেয়াস্ত্র ও বেশ কিছু বিভিন্ন অস্ত্রের অ্যামুনিশনসহ গ্রেফতার করা হয়।গ্রেফতারকৃতদের বিস্তারিত পরিচয়:
(১) মোঃ নেছার (৩০), (এফডিএমএন) পিতা-মৃত আব্দুল মোতালেব, ক্যাম্প-১৫, ব্লক-ডি/৩, উখিয়া, কক্সবাজার,(২) রবি আলম (১৮), (এফডিএমএন), পিতা-আব্দুল জব্বার, ক্যাম্প-১৫, ব্লক-এইচ/৭, উখিয়া, কক্সবাজার।(৩) মোঃ আবুল কালাম (২৮), (এফডিএমএন), পিতা-মোঃ শাকের আহমেদ, ক্যাম্প-১৫ ব্লক-এইচ/১২, উখিয়া, কক্সবাজার।
(৪) আবুল হোসেন (২০), (বাংলাদেশী নাগরিক) পিতা-আঃ রহমান, ক্যাম্প-৪, ব্লক-সি/২৫, উখিয়া, কক্সবাজার(৫) মোঃ আইয়ুব (২২), (এফডিএমএন), পিতা-বাশার, ক্যাম্প-১৫ ব্লক-এইচ/৫, উখিয়া, কক্সবাজার,গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ইউনুস মাঝি, মৌলভী ইব্রাহিম ও আরাফাতের নেতৃত্বে ২৫-৩০ জনের আরসার একটি গ্রুপ ক্যাম্প-১৫ এ অবস্থান করে। তারা উখিয়া ও হ্নীলার পাহাড়ী এলাকায় স্থানীয় কৃষকসহ নিরীহ লোকদের অপহরণপূর্বক মোটা অংকের টাকা আদায় করে থাকে। যে সকল স্থানীয় কৃষক পাহাড়ী এলাকায় কৃষিক্ষেতে কাজ করতে বা গরু চড়াতে অথবা বনে কাঠ সংগ্রহ করতে যায় এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সুযোগ বুঝে এ সকল নিরীহ কৃষকদের অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে গহীন পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে এবং নির্যাতনের ভিডিও ও ভিকটিমের চিৎকার তার পরিবারের সদস্যদের ফোনের মাধ্যমে শুনিয়ে মুক্তিপণের টাকা আদায় করে থাকে। গ্রেফতারকৃতরা আরো জানায় যে, তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা ও ব্যবহৃত অস্ত্রের অর্থের যোগানের জন্য মূলত তারা এই অপহরণের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায় করে থাকে।

গ্রেফতারকৃত ০৫ জন আসামীর মধ্যে আবুল হোসেন স্থানীয় বাঙ্গালী। সে মূলত আরসা সন্ত্রাসীদের অপহরণ সংক্রান্তে তথ্যদাতা। কোন কৃষকের আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে, কাকে অপহরণ করলে মুক্তিপণ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এই সংক্রান্তে তথ্য আরসা সন্ত্রাসীদের নিকট প্রদান করতো। তাছাড়া টেকনাফ, মহেশখালীসহ অন্যান্য জায়গা থেকে লোকাল অস্ত্র সংগ্রহে সে আরসার সদস্যদের সহযোগিতা করতো বলে আমাদের জানায়।
উল্লেখ্য যে, অভিযান পরিচালনাকালে আভিযানিক দল উক্ত আরসা সন্ত্রাসীদের আস্তানার নিকট পৌঁছা মাত্রই র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে আরসা সন্ত্রাসীরা আভিযানিক দলের উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ করতে থাকে। ফলে র‌্যাবের একজন সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। বর্তমানে সে রামু সিএমএইচ-এ চিকিৎসাধীন রয়েছে।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

চকরিয়ায় বসতভিটা ও দোকান দখলের জন্য হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট: আহত ৫

উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের র‌্যাবে অভিযানে বিপুল পরিমাণ  অস্ত্র ও গোলা-বারুদসহ ৫ জন আরসা সন্ত্রাসী আটক

প্রকাশিত সময় : ০৬:১৭:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বিশেষ করে আরসা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আতঙ্ক সৃষ্টি, হামলা, খুন, অপহরণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে থাকে। এরই প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১৫ গত ২০২৩ সালে ৯৪ জন এবং ২০২৪ সালে ২৪ জন আরসা সদস্য মোট ১১৮ জন আরসা সন্ত্রাসীকে ৭১টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়। সম্প্রতি মোছারখোলা, উনচিপ্রাং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকাগুলোতে অপহরণের মাত্রা বেড়ে যায়। তাছাড়া বিভিন্ন ক্যাম্পে হত্যাকান্ডের সংখ্যাও বাড়তে থাকে ফলে ক্যাম্পসমূহে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাতে র‌্যাব-১৫, এর অভিযানকালে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫ এ সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার একদল সদস্য বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ ক্যাম্পে নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১৫ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল অদ্য ১১ জুলাই ২০২৪ তারিখ আনুমানিক ভোরবেলা ০৪.৩০ ঘটিকায় ১৫নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মোছারখোলা নামক স্থানে একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে র‌্যাব আভিযানিক দল কর্তৃক সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার ০৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী ০৬টি আগ্নেয়াস্ত্র ও বেশ কিছু বিভিন্ন অস্ত্রের অ্যামুনিশনসহ গ্রেফতার করা হয়।গ্রেফতারকৃতদের বিস্তারিত পরিচয়:
(১) মোঃ নেছার (৩০), (এফডিএমএন) পিতা-মৃত আব্দুল মোতালেব, ক্যাম্প-১৫, ব্লক-ডি/৩, উখিয়া, কক্সবাজার,(২) রবি আলম (১৮), (এফডিএমএন), পিতা-আব্দুল জব্বার, ক্যাম্প-১৫, ব্লক-এইচ/৭, উখিয়া, কক্সবাজার।(৩) মোঃ আবুল কালাম (২৮), (এফডিএমএন), পিতা-মোঃ শাকের আহমেদ, ক্যাম্প-১৫ ব্লক-এইচ/১২, উখিয়া, কক্সবাজার।
(৪) আবুল হোসেন (২০), (বাংলাদেশী নাগরিক) পিতা-আঃ রহমান, ক্যাম্প-৪, ব্লক-সি/২৫, উখিয়া, কক্সবাজার(৫) মোঃ আইয়ুব (২২), (এফডিএমএন), পিতা-বাশার, ক্যাম্প-১৫ ব্লক-এইচ/৫, উখিয়া, কক্সবাজার,গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ইউনুস মাঝি, মৌলভী ইব্রাহিম ও আরাফাতের নেতৃত্বে ২৫-৩০ জনের আরসার একটি গ্রুপ ক্যাম্প-১৫ এ অবস্থান করে। তারা উখিয়া ও হ্নীলার পাহাড়ী এলাকায় স্থানীয় কৃষকসহ নিরীহ লোকদের অপহরণপূর্বক মোটা অংকের টাকা আদায় করে থাকে। যে সকল স্থানীয় কৃষক পাহাড়ী এলাকায় কৃষিক্ষেতে কাজ করতে বা গরু চড়াতে অথবা বনে কাঠ সংগ্রহ করতে যায় এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সুযোগ বুঝে এ সকল নিরীহ কৃষকদের অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে গহীন পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে এবং নির্যাতনের ভিডিও ও ভিকটিমের চিৎকার তার পরিবারের সদস্যদের ফোনের মাধ্যমে শুনিয়ে মুক্তিপণের টাকা আদায় করে থাকে। গ্রেফতারকৃতরা আরো জানায় যে, তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা ও ব্যবহৃত অস্ত্রের অর্থের যোগানের জন্য মূলত তারা এই অপহরণের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায় করে থাকে।

গ্রেফতারকৃত ০৫ জন আসামীর মধ্যে আবুল হোসেন স্থানীয় বাঙ্গালী। সে মূলত আরসা সন্ত্রাসীদের অপহরণ সংক্রান্তে তথ্যদাতা। কোন কৃষকের আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে, কাকে অপহরণ করলে মুক্তিপণ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এই সংক্রান্তে তথ্য আরসা সন্ত্রাসীদের নিকট প্রদান করতো। তাছাড়া টেকনাফ, মহেশখালীসহ অন্যান্য জায়গা থেকে লোকাল অস্ত্র সংগ্রহে সে আরসার সদস্যদের সহযোগিতা করতো বলে আমাদের জানায়।
উল্লেখ্য যে, অভিযান পরিচালনাকালে আভিযানিক দল উক্ত আরসা সন্ত্রাসীদের আস্তানার নিকট পৌঁছা মাত্রই র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে আরসা সন্ত্রাসীরা আভিযানিক দলের উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ করতে থাকে। ফলে র‌্যাবের একজন সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। বর্তমানে সে রামু সিএমএইচ-এ চিকিৎসাধীন রয়েছে।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।