১০:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আটক আতঙ্কে পুরুষশূন্য সেন্টমার্টিন দ্বীপ

কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপটির পুরুষ বাসিন্দারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে কোস্ট গার্ডের দায়ের করা মামলার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

গত ২৪ জুলাই টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন নৌরুটের বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবিতে তিনজনের মৃত্যু এবং উদ্ধার তৎপরতায় বাধা দেওয়ায় কোস্ট গার্ডের সঙ্গে দ্বীপবাসীর উত্তেজনা দেখা দেয়। এর জেরে ২৭ জুলাই ২৯ জনের নাম এজাহারে উল্লেখ করে এবং আরও ৩৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে কোস্ট গার্ডের সেন্টমার্টিন স্টেশন কমান্ডার লে. কমান্ডার অনিক মাহমুদ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় মামলা করেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক মামলা হিসেবে প্রত্যাহারের জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে।

দ্বীপবাসীর পক্ষে আইনজীবী আবদুল মান্নান সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত টেকনাফে আবেদনটি করেন।

আইনজীবী আবদুল মান্নান জানান, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত টেকনাফের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক হামিমুন তানজিন আবেদনটি ২৪ জুলাই সংঘর্ষের জেরে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কোস্ট গার্ড
ওই মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন দ্বীপের পুরুষ বাসিন্দারা।
আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা সেন্টমার্টিন ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর আবদুল বাতেনকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এই আইনজীবী বলেন, গত ২৪ জুলাই টেকনাফ সদরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাবেশ হয়। সেখানে যোগ দিতে সেন্টমার্টিন থেকে কিছু লোক রওনা দিলে। ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। এ সময় উদ্ধার তৎপরতায় দ্বীপবাসীকে বাধা দেন দায়িত্বরত কোস্ট গার্ড সদস্যরা।

এতে দুই পক্ষের উত্তেজনা এবং অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এ সময় ট্রলারডুবিতে ছাত্রসহ তিনজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় কোস্ট গার্ডের পক্ষ থেকে একটি মামলা হয়।

এখানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলকভাবে অনেককেই আসামি করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি যাকে করা হয়েছে, তার ভাই এই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। এ ছাড়াও মামলায় সেন্টমার্টিন বিএনপির সভাপতি নুরুল আলম, সহসভাপতি আবদুর রহমান, জামায়াতের নায়েবে আমির নুর আহমদকে আসামি করা হয়। অন্য যাদের নাম এজাহারে রয়েছে তারা সবাই ছাত্র ও অভিভাবক।

আবদুল মান্নান আরও বলেন, ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতি হয়রানিমূলক মামলা না করার ও প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে আবেদনটি করা হয়েছে। আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আদেশ নিয়েছেন।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম জানান, ২৪ জুলাই ট্রলারডুবি, উদ্ধার তৎপরতায় কোস্ট গার্ডের বাধার কারণে সৃষ্ট উত্তেজনাটি অপ্রীতিকর ছিল। এ ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুতে দ্বীপবাসী শোকাহত। শোকাবহ পরিবেশ এখন দ্বীপজুড়ে রয়েছে। এর মধ্যে মামলার কারণে দ্বীপজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। দ্বীপে এখন কোনো পুরুষ নেই বললেই চলে। এ মামলা প্রত্যাহার করে কোস্ট গার্ডের সঙ্গে দ্বীপবাসীর সম্পর্ক উন্নত করতে হবে।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওসমান গণি বলেন, এ সংক্রান্ত আদালতে নির্দেশনা এখনও হাতে আসেনি। আদালতের নির্দেশনা মতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

আইন শৃঙ্খলা, দ্রব্যমুল্য, সংস্কার বিষয়ে সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ- ধর্ম উপদেষ্টা

আটক আতঙ্কে পুরুষশূন্য সেন্টমার্টিন দ্বীপ

প্রকাশিত সময় : ০২:৩৯:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৪

কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপটির পুরুষ বাসিন্দারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে কোস্ট গার্ডের দায়ের করা মামলার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

গত ২৪ জুলাই টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন নৌরুটের বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবিতে তিনজনের মৃত্যু এবং উদ্ধার তৎপরতায় বাধা দেওয়ায় কোস্ট গার্ডের সঙ্গে দ্বীপবাসীর উত্তেজনা দেখা দেয়। এর জেরে ২৭ জুলাই ২৯ জনের নাম এজাহারে উল্লেখ করে এবং আরও ৩৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে কোস্ট গার্ডের সেন্টমার্টিন স্টেশন কমান্ডার লে. কমান্ডার অনিক মাহমুদ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় মামলা করেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক মামলা হিসেবে প্রত্যাহারের জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে।

দ্বীপবাসীর পক্ষে আইনজীবী আবদুল মান্নান সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত টেকনাফে আবেদনটি করেন।

আইনজীবী আবদুল মান্নান জানান, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত টেকনাফের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক হামিমুন তানজিন আবেদনটি ২৪ জুলাই সংঘর্ষের জেরে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কোস্ট গার্ড
ওই মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন দ্বীপের পুরুষ বাসিন্দারা।
আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা সেন্টমার্টিন ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর আবদুল বাতেনকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এই আইনজীবী বলেন, গত ২৪ জুলাই টেকনাফ সদরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাবেশ হয়। সেখানে যোগ দিতে সেন্টমার্টিন থেকে কিছু লোক রওনা দিলে। ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। এ সময় উদ্ধার তৎপরতায় দ্বীপবাসীকে বাধা দেন দায়িত্বরত কোস্ট গার্ড সদস্যরা।

এতে দুই পক্ষের উত্তেজনা এবং অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এ সময় ট্রলারডুবিতে ছাত্রসহ তিনজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় কোস্ট গার্ডের পক্ষ থেকে একটি মামলা হয়।

এখানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলকভাবে অনেককেই আসামি করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি যাকে করা হয়েছে, তার ভাই এই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। এ ছাড়াও মামলায় সেন্টমার্টিন বিএনপির সভাপতি নুরুল আলম, সহসভাপতি আবদুর রহমান, জামায়াতের নায়েবে আমির নুর আহমদকে আসামি করা হয়। অন্য যাদের নাম এজাহারে রয়েছে তারা সবাই ছাত্র ও অভিভাবক।

আবদুল মান্নান আরও বলেন, ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতি হয়রানিমূলক মামলা না করার ও প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে আবেদনটি করা হয়েছে। আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আদেশ নিয়েছেন।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম জানান, ২৪ জুলাই ট্রলারডুবি, উদ্ধার তৎপরতায় কোস্ট গার্ডের বাধার কারণে সৃষ্ট উত্তেজনাটি অপ্রীতিকর ছিল। এ ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুতে দ্বীপবাসী শোকাহত। শোকাবহ পরিবেশ এখন দ্বীপজুড়ে রয়েছে। এর মধ্যে মামলার কারণে দ্বীপজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। দ্বীপে এখন কোনো পুরুষ নেই বললেই চলে। এ মামলা প্রত্যাহার করে কোস্ট গার্ডের সঙ্গে দ্বীপবাসীর সম্পর্ক উন্নত করতে হবে।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওসমান গণি বলেন, এ সংক্রান্ত আদালতে নির্দেশনা এখনও হাতে আসেনি। আদালতের নির্দেশনা মতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।