০২:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মহেশখালীতে বিধিবহির্ভূতভাবে প্রধান শিক্ষক হতে মরিয়া দুই শিক্ষক

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর জলেয়ারমারঘাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ ও সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) মোঃ বাবুল নামের দুই ব্যক্তি চালচাতুরির আশ্রয় ও জাল সনদ দিয়ে প্রধান শিক্ষক( ভারপ্রাপ্ত) হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, সাবেক প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি, ও সনদ জাল জালিয়াতির ঘটনা স্কুলের সাবেক পরিচালনা কমিটি ও মাউসির নজরে আসলে নিজের অপরাগতা দেখিয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে স্ব-ইচ্ছায় পদত্যাগ করেন বিগত ২০ অক্টোবর ২০২২ তারিখ। সে স্ব-ইচ্ছায় পদত্যাগ করে স্কুল থেকে সরে গেলেও হাল ছেড়ে দেয়নি। গোপনীয়তা রক্ষা করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জোর তৎপরতা চালিয়ে আইটি বিভাগে পুনবার নিয়োগ পেয়ে শিক্ষকতা করে আসছে। আর বর্তমান প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে মনগড়া অবান্তর অভিযোগ ও কুৎসা রটিয়ে তাকে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে পুনরায় প্রধান শিক্ষক পদে পদায়ন হওয়ার নানা ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। অন্যদিকে সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) মোহাম্মদ বাবুলও নূর মোহাম্মদের পথে হাঁটছে বলে জানায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই স্কুলের কয়েক সহকারী শিক্ষক। এব্যাপারে তারা জানান, সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূতভাবে নিয়োপ্রাপ্ত শিক্ষক মোঃ বাবুলও ইদানিং প্রধান শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। এমনকি সে ও নূর মোহাম্মদ দুজনেই যে যার মতো প্রধান শিক্ষক কায়সার লিটনকে তার পদ থেকে সরিয়ে দিতে দিনদিনই মরিয়া হয়ে উঠেছেন। লিটনের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালিয়ে জনসমর্থন লাভের অপচেষ্টা অব্যাহত রাখছে এ দুই শিক্ষক। আবার কায়সার লিটন ছাড়াও তারা দুজন একে অপরের (নূর মোহাম্মদ ও বাবুল) বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি কাঁদাছোড়াছুড়ি করতেও দ্বিধাবোধ করছেনা।

এঘটনায় অত্র স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে নানা কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। স্কুলের এমন পরিস্থিতি পাঠদান সহ অন্যান্য কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানা গেছে। এমন উদ্ভট পরিস্থিতি সমাধানের জন্য প্রশাসনকে সহযোগিতা কামনা করেন স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোঃ বাবুল বলেন, তিনি পরীক্ষা ছাড়াই তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সার্টিফিকেটের সনদ জাল, তার কোন যোগ্যতা নাই। সে পদত্যাগ করে নতুন সনদ বানিয়ে আবারো আইসিটি শিক্ষক হিসেবে এমপিও ভুক্ত হয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে চাই। তা হাস্যকর বিষয় বটে।

এদিকে সাবেক প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ বলেন, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইংরেজী নুর মোহাম্মদ বাবুল এর কোন নিয়োগ বোার্ড গঠন করা হয় নাই। তাকে শুধু নামে মাত্র নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। সে জাল-জালিয়াতি কর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সৃজন করে সে এমপিওভুক্ত হয়। এছাড়া নুর মোহাম্মদ বাবুলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত একটি জালিয়াতি মামলা চট্টগ্রাম জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে চলমান আছে। সহকারী শিক্ষক বাবুলের কোন নিয়োগ পরীক্ষাই হয় নাই। মোঃ বাবুল সহকারী শিক্ষক ইংরেজি। তার ৩০০ নম্বরের ইংরেজি না থাকার সত্ত্বেও আমরা তাকে নিয়োগ দিয়েছি অথচ সে বিধি মোতাবেক নিয়োগ পরীক্ষা অংশগ্রহণ না করেও এমপি ভুক্ত হয়েছে। সে কিভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হতে চাই সে প্রশ্ন আমার। তার কোন নিয়োগ বোর্ড না করে আমি তাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলাম। সে একজন সরকারি বিধিবহির্ভূত শিক্ষক। সে আবার কিভাবে প্রধান শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখছে এবং তার সকল সনদ ভুয়া মনে হয়। কারণ সে ফাজিল পাশ করা মৌলবী। এছাড়া তাহার নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল সিট বিশ্লেষণ করলে বা যাচাই করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। আমি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে তাকে শুধুমাত্র নিয়োগ দিয়েছিলাম। তাহার ফলাফলে শুধুমাত্র আমার আর সভাপতি স্বাক্ষর ছিল। বাকি সদস্যদের স্বাক্ষরগুলো জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে নমুনা স্বাক্ষর করে দিয়েছে বাবুল নিজেই।

শাপলাপুর জলেয়ারমার ঘাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বলেন, কাগজপত্র সঠিক না থাকলে কোন নিয়োগ প্রার্থীর আবেদন করার সুযোগ থাকে না। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করার পর তার মধ্যে গড়মিল পাওয়া গেলে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। এ ব্যাপারে কারো কিছু করার থাকে না।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মহেশখালী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের এক পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, আমাকে কয়েকজন ফোনে বিষয়টি বলেছে। কিন্তু কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে নিয়োগ পরীক্ষার দিন সনদ যাচাই-বাছাই করে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

‘স্টেপ ডাউন ইউনুস’পোস্ট করে আটক হলেন যুবক!

মহেশখালীতে বিধিবহির্ভূতভাবে প্রধান শিক্ষক হতে মরিয়া দুই শিক্ষক

প্রকাশিত সময় : ০২:২৬:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর জলেয়ারমারঘাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ ও সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) মোঃ বাবুল নামের দুই ব্যক্তি চালচাতুরির আশ্রয় ও জাল সনদ দিয়ে প্রধান শিক্ষক( ভারপ্রাপ্ত) হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, সাবেক প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি, ও সনদ জাল জালিয়াতির ঘটনা স্কুলের সাবেক পরিচালনা কমিটি ও মাউসির নজরে আসলে নিজের অপরাগতা দেখিয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে স্ব-ইচ্ছায় পদত্যাগ করেন বিগত ২০ অক্টোবর ২০২২ তারিখ। সে স্ব-ইচ্ছায় পদত্যাগ করে স্কুল থেকে সরে গেলেও হাল ছেড়ে দেয়নি। গোপনীয়তা রক্ষা করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জোর তৎপরতা চালিয়ে আইটি বিভাগে পুনবার নিয়োগ পেয়ে শিক্ষকতা করে আসছে। আর বর্তমান প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে মনগড়া অবান্তর অভিযোগ ও কুৎসা রটিয়ে তাকে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে পুনরায় প্রধান শিক্ষক পদে পদায়ন হওয়ার নানা ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। অন্যদিকে সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) মোহাম্মদ বাবুলও নূর মোহাম্মদের পথে হাঁটছে বলে জানায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই স্কুলের কয়েক সহকারী শিক্ষক। এব্যাপারে তারা জানান, সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূতভাবে নিয়োপ্রাপ্ত শিক্ষক মোঃ বাবুলও ইদানিং প্রধান শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। এমনকি সে ও নূর মোহাম্মদ দুজনেই যে যার মতো প্রধান শিক্ষক কায়সার লিটনকে তার পদ থেকে সরিয়ে দিতে দিনদিনই মরিয়া হয়ে উঠেছেন। লিটনের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালিয়ে জনসমর্থন লাভের অপচেষ্টা অব্যাহত রাখছে এ দুই শিক্ষক। আবার কায়সার লিটন ছাড়াও তারা দুজন একে অপরের (নূর মোহাম্মদ ও বাবুল) বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি কাঁদাছোড়াছুড়ি করতেও দ্বিধাবোধ করছেনা।

এঘটনায় অত্র স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে নানা কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। স্কুলের এমন পরিস্থিতি পাঠদান সহ অন্যান্য কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানা গেছে। এমন উদ্ভট পরিস্থিতি সমাধানের জন্য প্রশাসনকে সহযোগিতা কামনা করেন স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোঃ বাবুল বলেন, তিনি পরীক্ষা ছাড়াই তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সার্টিফিকেটের সনদ জাল, তার কোন যোগ্যতা নাই। সে পদত্যাগ করে নতুন সনদ বানিয়ে আবারো আইসিটি শিক্ষক হিসেবে এমপিও ভুক্ত হয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে চাই। তা হাস্যকর বিষয় বটে।

এদিকে সাবেক প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ বলেন, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইংরেজী নুর মোহাম্মদ বাবুল এর কোন নিয়োগ বোার্ড গঠন করা হয় নাই। তাকে শুধু নামে মাত্র নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। সে জাল-জালিয়াতি কর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সৃজন করে সে এমপিওভুক্ত হয়। এছাড়া নুর মোহাম্মদ বাবুলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত একটি জালিয়াতি মামলা চট্টগ্রাম জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে চলমান আছে। সহকারী শিক্ষক বাবুলের কোন নিয়োগ পরীক্ষাই হয় নাই। মোঃ বাবুল সহকারী শিক্ষক ইংরেজি। তার ৩০০ নম্বরের ইংরেজি না থাকার সত্ত্বেও আমরা তাকে নিয়োগ দিয়েছি অথচ সে বিধি মোতাবেক নিয়োগ পরীক্ষা অংশগ্রহণ না করেও এমপি ভুক্ত হয়েছে। সে কিভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হতে চাই সে প্রশ্ন আমার। তার কোন নিয়োগ বোর্ড না করে আমি তাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলাম। সে একজন সরকারি বিধিবহির্ভূত শিক্ষক। সে আবার কিভাবে প্রধান শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখছে এবং তার সকল সনদ ভুয়া মনে হয়। কারণ সে ফাজিল পাশ করা মৌলবী। এছাড়া তাহার নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল সিট বিশ্লেষণ করলে বা যাচাই করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। আমি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে তাকে শুধুমাত্র নিয়োগ দিয়েছিলাম। তাহার ফলাফলে শুধুমাত্র আমার আর সভাপতি স্বাক্ষর ছিল। বাকি সদস্যদের স্বাক্ষরগুলো জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে নমুনা স্বাক্ষর করে দিয়েছে বাবুল নিজেই।

শাপলাপুর জলেয়ারমার ঘাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বলেন, কাগজপত্র সঠিক না থাকলে কোন নিয়োগ প্রার্থীর আবেদন করার সুযোগ থাকে না। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করার পর তার মধ্যে গড়মিল পাওয়া গেলে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। এ ব্যাপারে কারো কিছু করার থাকে না।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মহেশখালী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের এক পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, আমাকে কয়েকজন ফোনে বিষয়টি বলেছে। কিন্তু কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে নিয়োগ পরীক্ষার দিন সনদ যাচাই-বাছাই করে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে।