০৮:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিলংজার রহমতপুরে বসতবাড়ি জবর-দখলের ঘটনায় মামলা

কক্সবাজার সদর ঝিলংজা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড রহমতপুর এলাকাতে একটি বসতবাড়ি জবরদখল পূর্বক উচ্ছেদ করতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে গুরুতর কাঁটা জখম, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা ও সরকারী আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঝিলংজা রহমতপুরের বাসিন্দা নুরুল আলমের পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা, লুটপাট ও বসতবাড়ি জবর দখলের ঘটনায় এজাহারনামীয় অভিযুক্তরা হলো ঝিলংজার দক্ষিণ লারপাড়ার মৃত কামালের পুত্র নুরুল ইসলাম প্রকাশ নুরু ডাকাত (৪০), সাইফুল ইসলাম সাফু (৩৫), নোয়াখালীর বাসিন্দা, বর্তমানে কক্সবাজার পৌরসভার দক্ষিণ বাহারছড়াতে বসবাসকারী ফখরুল ইসলামের পুত্র নাজমুল হোসেন মিঠু (৩৬), পৌরসভার আলির জাহালের মতিউর রহমানের পুত্র আব্দুল মালেক ইমন (৪০), ঝিলংজা ইউপির রহমতপুরের মৃত শামসুল আলম মাস্টারের পুত্র সাবেক আর্মি সৈনিক (বরখাস্ত) মোরশেদ আলম টিটু (৪০), খুরুশকুল ইউনিয়নের রুহুল্লার ডেইল এলাকার ওলা মিয়ার পুত্র মোঃ তৌহিদু, মহেশখালীর ১৪ মাঝি মাল্লা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি মোঃ আব্দুস ছোবাহানের পুত্র কামাল পাশা প্রকাশ কামাল ডাকাত (৬০), মোঃ আরিফ (৩৫), ছাবের আহমদ (৩২), উভয়পিতা- কামাল পাশা সর্বসাং- মহেশখালী, বর্তমানে নতুন জেল গেইট, রহমতপুর, ১নং ওয়ার্ড, ঝিলংজা, মনিয়া (২৬), পিতা-মোঃ ইসলাম সাং- পশ্চিম লার পাড়া, মোঃ জসিম (২৮), পিতা- অজ্ঞাত, সাং- নতুন জেল গেইট, রহমতপুর, ১নং ওয়ার্ড, ঝিলংজা ইউপি, সর্বথানা ও জেলা- কক্সবাজারসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন ।

এর আগে গত ১ জুলাই (সোমবার) অভিযুক্ত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে উল্লেখ্য ঘটনার জেরে কক্সবাজার সদর থানায় (জিআর ৪৪৫/২৪) মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরপর ২৯ আগষ্ট (বৃহস্পতিবার) ফৌজদারী কার্যবিধির ১০৭/১১৭(সি) ধারা মতে সদর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপরোক্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মিচ মামলা দায়ের করা হয়। পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে বলে বিষয়ে প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছে বাদী নুরুল আলম।

এঘটনা নিয়ে ৪ আগষ্ট ‘ঝিলংজায় ভূমিদস্যদের তাণ্ডবে এলাকা ছাড়া ৫০ বছরের পরিবার’ ও ১১ আগষ্ট
‘অন্যের বাড়িতে আশ্রিত ভুক্তভোগী পরিবার’ “আন্দোলনের মাঝে প্রশাসনের কর্মব্যস্ততার সুযোগে ৫০ বছরের বসতবাড়ি দখল” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক মেহেদী। এছাড়াও জাতীয় স্যাটেলাইট টেলিভিশন মাই টিভি ও অনলাইন নিউজ পোর্টালের অসংখ্যা প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে ঘটনাটি প্রশাসনের নজরে আসে।  

থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী পরিবারের ওপর হামলা করে লুটপাট ও বসতবাড়ি দখলকালীন সময়ে ত্রিফলনাইন এ (৯৯৯) অভিযোগ পেয়ে পুলিশের ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যান।জবর দখলের কবল থেকে নুরুল আলমের বসতবাড়ি উদ্ধারের চেষ্টা করে পরিশেষে ব্যর্থ হন পুলিশ। এ ঘটনায় সদর উপজেলার ঝিলংজা দক্ষিণ লারপাড়ার বাসিন্দা, থানার তালিকাভূক্ত সশস্ত্র সন্ত্রাসী, ২৫-৩০ মামলার আসামি ভূমিদস্যু নুরুল ইসলাম প্রকাশ নুরু ডাকাত (১ নম্বর আসমি) ও এলাকার ত্রাস ভূমিদস্যু শাহাব উদ্দিন শাপু (২ নম্বর আসামি) সাবেক সেনা সদস্য (বরখাস্ত) অবৈধ অস্ত্রধারী ভূমিদস্যু মোর্শেদ আলম টিটু (৩ নং আসামি) ১১ জনের নামে মামলা করেন ক্ষতিগ্রস্ত নুরুল আলম। এ মামলায় আরও ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘরবাড়ি জবর-দখল হওয়ার পর থেকে নুরুল আলমের পরিবারটি অন্যের বাড়িতে আশ্রিত হয়ে বসবাস করছে।  

অভিযোগ ও ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, বাপ-দাদার আমল থেকে ওই জমি ভোগ দখলে আছে নুরুল আলম। ওখানে ঘর তুলে বসবাস করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ডাকাতি, দস্যুতা, মাদক, চাঁদাবাজি, অস্ত্র, নারীর শ্লীলতাহানি সহ অসংখ্য ফৌজদারি অপরাধের মামলা রয়েছে। ২০১১ সনে ভুক্তভোগী নুরুল আলম তার ভোগদখলীয় জায়গা বন্দোবস্ত পেতে সরকারের কাছে আবেদন করেন। যাহা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্মারক নং-জেঃপ্রঃ/ কক্স/রাজস্ব/২০১১-১৬৮২, তাং-১৬/০৮/২০১১ খ্রিঃ তারিখে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সহকারি কমিশনার (ভূমি), সদরকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দিয়েছে। যার কার্যক্রম তদন্তাধীন রয়েছে। এ জমিতে নুরুল আলম নিজ উদ্যোগে রোপন করা ৩৫ বছর বয়সী বড় বড় মূল্যবান গাছ আছে। নুরুল আলমের অসহায়ত্বের সুযোগ চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা জোরপূর্বক জবর দখলের অপচেষ্টা এবং জোরপূর্বক অলিখিত স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়া ভূঁয়া, জালিয়াতি ডুকুমেন্টপত্র সৃজন করে উক্ত জায়গাটি জবর দখলের কু-উদ্দেশ্যে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাচ্ছে। ইতিপূর্বে ভূমিদস্যু চক্রটি নুরুল আলম ও তার দুই ছেলেকে মিথ্যা মামলায় জেলে দিয়ে জায়গায় স্থিত বড় বড় একাধিক গাছ জোরপূর্বক কেটে নিয়া যায়। ভূমিদস্যু সন্ত্রাসীরা প্রভাবশালী হওয়াতে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কিছুতেই পেরে উঠতে পারছেনা। ভূমিদস্যুরা ইতিপূর্বে নুরুল আলমের বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলা করিলেও উক্ত মামলাগুলো মিথ্যা প্রমাণ সাপেক্ষে খারিজ হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে নুরুল আলম বলেন, ১ম ঘটনার দিন ২৯/০৬/২০২৪ইং তারিখ দুপুর অনুমান ২ ঘটিকার সময় রহমতপুর এলাকাস্থ আমার মালিকানাধীন ও ভোগদখলীয় তপশীলভূক্ত জমিতে অনধিকারে ঢুকে আমার ঘর-ভিটা জবর দখলের উদ্দেশ্যে আমার ঘর-দুয়ার বিক্ষিপ্তভাবে কেটে ভাংচুর করে এবং আমার ছেলে, কন্যা ও পুত্রবধুসহ মোট ৫জনকে অবৈধ অস্ত্রের দ্বারা আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জখম করে এবং ঘরে থাকা মূল্যবান মালামাল, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা লুটপাট করে। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা (নং-০২/৪৪৫) করি।আসামিরা এ মামলায় জামিন নিয়ে আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে আমি থানা-পুলিশসহ গন্যমান্য লোকজনদের সহায়তায় পুনরায় আমার বসতভিটার৩ দখলে গেলে গত ০৫ আগষ্ট সরকার পতনের কারণেই দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির সুযোগে অভিযুক্তরা পুনরায় আমার বসতভিটায় ঢুকে আমাদেরকে মারধরপূর্বক অবৈধ অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে ঘর থেকে বের করিয়া দেয়।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে ভূমিদস্যুরা আমার বসতভিটায় অবৈধভাবে অবস্থান করছে এবং আমি এখন নিজের বাড়ি ঘর হারিয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়া অন্যের ঘরে আশ্রিত থেকে মানবেতর দিনযাপন করছি। উক্ত ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। অভিযুক্ত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যরা আমাদের অসহায়ত্বের সুযোগে আমার বসতভিটা জবর দখল করে নিতে দ্বিধাবোধ করেনি। জবরদখল হওয়া বসতবাড়ি উদ্ধার ও জড়িত ভূমিদস্যু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন ভুক্তভোগী নুরুল আলম।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, বাড়ি ঘর জবর দখলের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার পরপরই একজন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

নাগরিক বিবেক কক্সবাজার (নাবিক) আয়োজিত সীরাত কুইজ ফাইনাল পর্ব ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন

ঝিলংজার রহমতপুরে বসতবাড়ি জবর-দখলের ঘটনায় মামলা

প্রকাশিত সময় : ০৫:৫৪:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কক্সবাজার সদর ঝিলংজা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড রহমতপুর এলাকাতে একটি বসতবাড়ি জবরদখল পূর্বক উচ্ছেদ করতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে গুরুতর কাঁটা জখম, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা ও সরকারী আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঝিলংজা রহমতপুরের বাসিন্দা নুরুল আলমের পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা, লুটপাট ও বসতবাড়ি জবর দখলের ঘটনায় এজাহারনামীয় অভিযুক্তরা হলো ঝিলংজার দক্ষিণ লারপাড়ার মৃত কামালের পুত্র নুরুল ইসলাম প্রকাশ নুরু ডাকাত (৪০), সাইফুল ইসলাম সাফু (৩৫), নোয়াখালীর বাসিন্দা, বর্তমানে কক্সবাজার পৌরসভার দক্ষিণ বাহারছড়াতে বসবাসকারী ফখরুল ইসলামের পুত্র নাজমুল হোসেন মিঠু (৩৬), পৌরসভার আলির জাহালের মতিউর রহমানের পুত্র আব্দুল মালেক ইমন (৪০), ঝিলংজা ইউপির রহমতপুরের মৃত শামসুল আলম মাস্টারের পুত্র সাবেক আর্মি সৈনিক (বরখাস্ত) মোরশেদ আলম টিটু (৪০), খুরুশকুল ইউনিয়নের রুহুল্লার ডেইল এলাকার ওলা মিয়ার পুত্র মোঃ তৌহিদু, মহেশখালীর ১৪ মাঝি মাল্লা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি মোঃ আব্দুস ছোবাহানের পুত্র কামাল পাশা প্রকাশ কামাল ডাকাত (৬০), মোঃ আরিফ (৩৫), ছাবের আহমদ (৩২), উভয়পিতা- কামাল পাশা সর্বসাং- মহেশখালী, বর্তমানে নতুন জেল গেইট, রহমতপুর, ১নং ওয়ার্ড, ঝিলংজা, মনিয়া (২৬), পিতা-মোঃ ইসলাম সাং- পশ্চিম লার পাড়া, মোঃ জসিম (২৮), পিতা- অজ্ঞাত, সাং- নতুন জেল গেইট, রহমতপুর, ১নং ওয়ার্ড, ঝিলংজা ইউপি, সর্বথানা ও জেলা- কক্সবাজারসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন ।

এর আগে গত ১ জুলাই (সোমবার) অভিযুক্ত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে উল্লেখ্য ঘটনার জেরে কক্সবাজার সদর থানায় (জিআর ৪৪৫/২৪) মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরপর ২৯ আগষ্ট (বৃহস্পতিবার) ফৌজদারী কার্যবিধির ১০৭/১১৭(সি) ধারা মতে সদর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপরোক্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মিচ মামলা দায়ের করা হয়। পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে বলে বিষয়ে প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছে বাদী নুরুল আলম।

এঘটনা নিয়ে ৪ আগষ্ট ‘ঝিলংজায় ভূমিদস্যদের তাণ্ডবে এলাকা ছাড়া ৫০ বছরের পরিবার’ ও ১১ আগষ্ট
‘অন্যের বাড়িতে আশ্রিত ভুক্তভোগী পরিবার’ “আন্দোলনের মাঝে প্রশাসনের কর্মব্যস্ততার সুযোগে ৫০ বছরের বসতবাড়ি দখল” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক মেহেদী। এছাড়াও জাতীয় স্যাটেলাইট টেলিভিশন মাই টিভি ও অনলাইন নিউজ পোর্টালের অসংখ্যা প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে ঘটনাটি প্রশাসনের নজরে আসে।  

থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী পরিবারের ওপর হামলা করে লুটপাট ও বসতবাড়ি দখলকালীন সময়ে ত্রিফলনাইন এ (৯৯৯) অভিযোগ পেয়ে পুলিশের ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যান।জবর দখলের কবল থেকে নুরুল আলমের বসতবাড়ি উদ্ধারের চেষ্টা করে পরিশেষে ব্যর্থ হন পুলিশ। এ ঘটনায় সদর উপজেলার ঝিলংজা দক্ষিণ লারপাড়ার বাসিন্দা, থানার তালিকাভূক্ত সশস্ত্র সন্ত্রাসী, ২৫-৩০ মামলার আসামি ভূমিদস্যু নুরুল ইসলাম প্রকাশ নুরু ডাকাত (১ নম্বর আসমি) ও এলাকার ত্রাস ভূমিদস্যু শাহাব উদ্দিন শাপু (২ নম্বর আসামি) সাবেক সেনা সদস্য (বরখাস্ত) অবৈধ অস্ত্রধারী ভূমিদস্যু মোর্শেদ আলম টিটু (৩ নং আসামি) ১১ জনের নামে মামলা করেন ক্ষতিগ্রস্ত নুরুল আলম। এ মামলায় আরও ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘরবাড়ি জবর-দখল হওয়ার পর থেকে নুরুল আলমের পরিবারটি অন্যের বাড়িতে আশ্রিত হয়ে বসবাস করছে।  

অভিযোগ ও ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, বাপ-দাদার আমল থেকে ওই জমি ভোগ দখলে আছে নুরুল আলম। ওখানে ঘর তুলে বসবাস করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ডাকাতি, দস্যুতা, মাদক, চাঁদাবাজি, অস্ত্র, নারীর শ্লীলতাহানি সহ অসংখ্য ফৌজদারি অপরাধের মামলা রয়েছে। ২০১১ সনে ভুক্তভোগী নুরুল আলম তার ভোগদখলীয় জায়গা বন্দোবস্ত পেতে সরকারের কাছে আবেদন করেন। যাহা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্মারক নং-জেঃপ্রঃ/ কক্স/রাজস্ব/২০১১-১৬৮২, তাং-১৬/০৮/২০১১ খ্রিঃ তারিখে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সহকারি কমিশনার (ভূমি), সদরকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দিয়েছে। যার কার্যক্রম তদন্তাধীন রয়েছে। এ জমিতে নুরুল আলম নিজ উদ্যোগে রোপন করা ৩৫ বছর বয়সী বড় বড় মূল্যবান গাছ আছে। নুরুল আলমের অসহায়ত্বের সুযোগ চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা জোরপূর্বক জবর দখলের অপচেষ্টা এবং জোরপূর্বক অলিখিত স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়া ভূঁয়া, জালিয়াতি ডুকুমেন্টপত্র সৃজন করে উক্ত জায়গাটি জবর দখলের কু-উদ্দেশ্যে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাচ্ছে। ইতিপূর্বে ভূমিদস্যু চক্রটি নুরুল আলম ও তার দুই ছেলেকে মিথ্যা মামলায় জেলে দিয়ে জায়গায় স্থিত বড় বড় একাধিক গাছ জোরপূর্বক কেটে নিয়া যায়। ভূমিদস্যু সন্ত্রাসীরা প্রভাবশালী হওয়াতে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কিছুতেই পেরে উঠতে পারছেনা। ভূমিদস্যুরা ইতিপূর্বে নুরুল আলমের বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলা করিলেও উক্ত মামলাগুলো মিথ্যা প্রমাণ সাপেক্ষে খারিজ হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে নুরুল আলম বলেন, ১ম ঘটনার দিন ২৯/০৬/২০২৪ইং তারিখ দুপুর অনুমান ২ ঘটিকার সময় রহমতপুর এলাকাস্থ আমার মালিকানাধীন ও ভোগদখলীয় তপশীলভূক্ত জমিতে অনধিকারে ঢুকে আমার ঘর-ভিটা জবর দখলের উদ্দেশ্যে আমার ঘর-দুয়ার বিক্ষিপ্তভাবে কেটে ভাংচুর করে এবং আমার ছেলে, কন্যা ও পুত্রবধুসহ মোট ৫জনকে অবৈধ অস্ত্রের দ্বারা আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জখম করে এবং ঘরে থাকা মূল্যবান মালামাল, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা লুটপাট করে। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা (নং-০২/৪৪৫) করি।আসামিরা এ মামলায় জামিন নিয়ে আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে আমি থানা-পুলিশসহ গন্যমান্য লোকজনদের সহায়তায় পুনরায় আমার বসতভিটার৩ দখলে গেলে গত ০৫ আগষ্ট সরকার পতনের কারণেই দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির সুযোগে অভিযুক্তরা পুনরায় আমার বসতভিটায় ঢুকে আমাদেরকে মারধরপূর্বক অবৈধ অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে ঘর থেকে বের করিয়া দেয়।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে ভূমিদস্যুরা আমার বসতভিটায় অবৈধভাবে অবস্থান করছে এবং আমি এখন নিজের বাড়ি ঘর হারিয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়া অন্যের ঘরে আশ্রিত থেকে মানবেতর দিনযাপন করছি। উক্ত ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। অভিযুক্ত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যরা আমাদের অসহায়ত্বের সুযোগে আমার বসতভিটা জবর দখল করে নিতে দ্বিধাবোধ করেনি। জবরদখল হওয়া বসতবাড়ি উদ্ধার ও জড়িত ভূমিদস্যু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন ভুক্তভোগী নুরুল আলম।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, বাড়ি ঘর জবর দখলের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার পরপরই একজন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।