০২:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
দেড় লাখ পিস ইয়াবা গাঁয়েব: এপারে আসা এক মগবাগীর হঁদিস নেই

বিজিবি’র পৃথক অভিযান: সাড়ে ১১ কোটি টাকার স্বর্ণ ও ৮০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার:আটক-২

  • সিএসএস রিপোর্ট:
  • প্রকাশিত সময় : ০৪:২৪:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ১৯৮ ভিউ

 

উখিয়া,টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ি’র সীমান্ত যেনো উভয় মানবপাচারের নিরাপদ রুট।স্থল ও জলসীমান্ত পয়েন্টে সংশ্লিষ্ট সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কড়া টহল ও নজরদারীর ঘাটতি নেই।তারপরও তাদের নজরদারী ও চোখ ফাঁকি দিয়ে উভয় মুখী আদান-প্রদান অব্যাহত রয়েছে।পাচারকারীরা যেভাবে সক্রিয় থাকুক না কেনো সীমান্তরক্ষী বাহিনীও জব্দ কিংবা আটক অভিযানে পিছিয়ে নেই।সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে কোন না দিন আটক হচ্ছেনা এমন দিন নেয়। এপার থেকে মিয়ানমারে পাচার করছে জ্বালানী তেল,ভোজ্য তেল,ইউরিয়া সার,চাল,ডাল,মরিচ,হলুদ,পেঁয়াজ
,রসুন,মোবাইল সেট,মোবাইল সীম,মোবাইল সামগ্রী,ব্যালট সহ চাহিদার পণ্য সামগ্রী।
বিনিময়ে ওপার থেকে পাচার করে নিয়ে আসছে ইয়াবা,স্বর্ণ, মাদক ও রাজস্ববিহীন গরুর চালান।সম্প্রতি টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ির কয়েকটি সীমান্ত পয়েন্ট থেকে বড়-বড় ইয়াবার চালান জব্দ করেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-কোষ্টগার্ড।তবে আটক বা জব্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে বিজিবি।যেমনি পাচার হচ্ছে,তেমনি আটকও হচ্ছে।আবার চোরাকারবারিরা বিভিন্ন সংস্থার অপপ্রচারেও নেমেছে।চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের সদস্যরা মিয়ানমারের চোরাকারবারিদের নিকট থেকে সরল বিশ্বাস জমিয়ে এপারে নিয়ে আসেন স্বর্ণ ও ইয়াবার বড় চালান।সাথে জিম্মাদার এবং বিশ্বাসী ওপার থেকে দু’য়েকজন মানুষও নিয়ে আসেন।তাদেরকে এপারের চোরাকারবারিরা জামাই আদরে বাড়িতে রাখেন। ওপার থেকে আনা ইয়াবা,স্বর্ণের চালান বিক্রি করে টাকা দেওয়ার নামে কৌশলে আত্মসাৎ করার বহু প্রচার রয়েছে।তেমনি ঘুমধুম সীমান্তে একাধিকবার ইয়াবা ও স্বর্ণের বার আত্মসাত ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।এ খবরে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন তৎপর হলেও পরে রহস্যজনক কারণে ধামাচাপা পড়ে যায়।চোরাকারবারিরা পাচারের জন্য নিরাপদ রুট হিসেবে বেঁচে নিয়েছেন সীমান্তের যেসব সমুহ উখিয়ার পালংখালীর আঞ্জুমান পাড়া,নলবনিয়া,পুটিবনিয়া,থাইংখালীর রহমতেরবিল,ধামনখালী,বালুখালী,ডিগলিয়া,
হাতিমোড়া,ডেইলপাড়া,তুলাতুলী,ভালুকিয়া,মরিচ্যার পাতাবাড়ি,খেওয়াছড়ি,পাগলির বিল,টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্ধীপ,শাহপরীর দ্ধীপ,জালিয়া পাড়া,ক্যাম্প পাড়া,
হারিয়াখালী,নাইট্যংপাড়া,কেরুনতলী,
দমদমিয়া,জাদিমোড়া,লেদা,হ্নীলা,খারাংখালী,
,উনচিপ্রাং হোয়াইক্যং,উলুবনিয়া,কাটাখালী ও নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের নোয়াপাড়া,মন্ডল পাড়া,মধ্যম পাড়া,জলপাইতলী,লেডুর আমবাগান,তুমব্রু পশ্চিমকুল তেতুঁলগাছতলা,লতিফিয়া মসজিদ সংলগ্ন,ঘুমধুম হাইস্কুল বাগান,তুমব্রু পশ্চিমকুল মসজিদ সংলগ্ন,তুমব্রু বাজার পাড়া,কোনার পাড়া,উত্তর পাড়া,ভাজাবনিয়া,চাকমা পাড়া,বাইশ ফাঁড়ী,আমতলী,রেজু,মঞ্জয় পাড়া,বরইতলী,
সোনাইছড়ি,চাকঢালা,আসারতলী,লেবুছড়ি,দোছড়ি পয়েন্ট সমুহ।এসব পয়েন্টে রয়েছে শক্তিশালী পাচারকারী সিন্ডিকেট। যারা দু’দেশের সীমান্তের উভয় মুখী পাচারে সক্রিয় রয়েছে।জলসীমান্তের জন্য টেকনাফ উপজেলার নাফনদী আর স্থল সীমান্তের জন্য উখিয়া এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সবচেয়ে নিরাপদ টার্নিং পয়েন্ট।এদিকে সীমান্ত পয়েন্ট অতিক্রম করে এপারে নিয়ে আসার পথে টেকনাফস্থ -২ বিজিবি’র অভিযানে সাড়ে ১০ কেজি স্বর্ণালংকার-বার,নগদ টাকা, মোবাইল সেট,মিয়ানমারের মুদ্রাসহ ২ জন আটক হয়েছে।আটককৃতরা মিয়ানমারের নাগরিক এমনটাই নিশ্চিত করেছেন টেকনাফস্থ ব্যাটালিয়ন-২ (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) বিজিবি।তাদের কাছে পাওয়া এসব স্বর্ণের আনুমানিক মূল্য ১১ কোটি ৫২ লাখ টাকা।(মঙ্গলবার)১৭ সেপ্টেম্বর দুপুর ১টার দিকে টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।এর আগে, সোমবার ১৬ (সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে টেকনাফ পৌরসভার অলিয়াবাদ নামক এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।আটককৃতরা হলেন, মিয়ানমারের মংডু’র সোদাপাড়া এলাকার মৃত ইউনুছের ছেলে মো. হাফিজুর রহমান (২৮) ও একই এলাকার -মৃত সুলতানের ছেলে মো. আনোয়ার (৩০)।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, মিয়ানমারের দুইজন নাগরিক পাচারের উদ্দেশ্যে টেকনাফ পৌরসভার অলিয়াবাদ এলাকায় অবস্থান নেন। বিজিবি’র গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে চালানো হয়।এ সময় সাড়ে ১০ কেজি স্বর্ণালংকারসহ তাদের আটক করে। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪০ বাংলাদেশি টাকা, ২ লাখ ২৯ হাজার ৫০০মিয়ানমারের মুদ্রা এবং ১০টি মোবাইল ফোন পাওয়া জব্দ করা হয়। উদ্ধার হাওয়া এসব স্বর্ণের আনুমানিক বাজার মূল্য ১১ কোটি ৫২ লাখ টাকা বলে বিজিবি নিশ্চিত করেন।অপরদিকে কক্সবাজারস্থ ৩৪ ব্যাটালিয়ন বিজিবি’র অধীনস্থ
ঘুমধুম বিওপি’র একটি অভিযানিক দল ৮০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে।গত রোববার ভোর সোয়া ৫ টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম বিওপি বিজিবি’র অধীনস্থ বিশেষ টহল দল কর্তৃক বিওপি’র অদুরে উত্তর-পশ্চিমের ঘুমধুম মধ্যম পাড়া এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় মালিক বিহীন এসব ইয়াবা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।উদ্ধার করা ইয়াবা গুলো পাশ্ববর্তী মিয়ানমার থেকে স্থানীয় চোরাকারবারিরা এনে সুযোগ বুঝে পাচারের চেষ্টা করছিল। কিন্তু গোপন সংবাদের ভিত্তিতে স্থানীয় বিজিবি’র সদস্যরা অভিযান চালিয়ে উক্ত ইয়াবা গুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দ করেন বলে জানা গেছে।বিজিবি কর্তৃক আটকের সফলতা রয়েছে। আবার সীমান্তে চোরাকারবারীদের লুটপাটের খবরও রয়েছে।গত কয়েক মাস পুর্বে ঘুমধুমের মধ্যপাড়া এলাকা থেকে স্থানীয় চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য রুবেল ইয়াবার একটি বড় চালান ছিনতাই করে এলাকা থেকে পালিয়ে যায়।মাসদেড়েক পর এলাকায় ফিরে বীরদর্পে পুর্বের পাচার কাজে সক্রিয় রয়েছে।গত ১৭/১৮ দিন পুর্বে ঘুমধুমের তুমব্রু পশ্চিমকুল লতিফিয়া মসজিদ সংলগ্ন পয়েন্ট দিয়ে এপারে পাচার করে আনা দেড় লাখ পিস ইয়াবা আত্মসাৎ করার খবর উড়ছে সর্বত্র।এসব ইয়াবা ঘুমধুম সীমান্তের চিহ্নিত চোরাকারবারি, ২০২১ সালে কক্সবাজারের কলাতলীর মুখে র‍্যাব-১৫’র হাতে বিপুল ইয়াবা, আরো ৪ জন সহযোগীসহ নোয়াহ গাড়ী নিয়ে আটক হওয়া ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের তুমব্রু পশ্চিমকুলের লতিফিয়া মসজিদ সংলগ্নস্থ এলাকার বাসিন্দা।দেড় লাখ পিস ইয়াবার সাথে মিয়ানমারের মগবাগীদের একজন’কে নিয়ে আসেন।ওই মগবাগী দেড় লাখ পিস ইয়াবার সেও একজন পার্টনার।মিয়ানমারেও এসব ইয়াবার আরো অংশীদার রয়েছে।ওই মগবাগীকে তার দেড় লাখ পিস ইয়াবা বিক্রি করে দিয়ে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া পর্যন্ত এপারে রাখেন।ইয়াবা বিক্রির টাকা ছাড়া ওই মগবাগী মিয়ানমারে ফিরতে পারবেন না।তাই এপারে প্রথমে ১০/১২ দিন লতিফিয়া মসজিদ সংলগ্ন একটি টিনের বাড়িতে রাখেন। ইয়াবা গুলো বিক্রির জন্য থাইংখালীর এক সিন্ডিকেট সদস্য, ঘুমধুম ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের বড়ুয়া পাড়ার এক শ্রমিক ও নেতা ইয়াবা সিন্ডিকেট পার্টনার,টিএন্ডটি এলাকার জনৈক কামাল মিলে গাঁয়েব করে ফেলেন।ওই মগবাগীকে বলতে থাকেন ইয়াবা গুলো বিক্রি করেছি।কিন্তু আরেকটা পার্টি বেঈমানী করে টাকা দিচ্ছেনা,আবার বলে বিজিবি মাল ধরে ফেলেছে, তাই আমাদের খুঁজতেছে।আমরা ঘরে থাকতে পারছিনা।আবার প্রচার করছে টিএন্ডটির কামাল মাল নিয়ে পালিয়ে গেছে।তার বাড়িতে তাঁলা মারা।স্ত্রী-সন্তান কেউ নাই।অথচ দেড় লাখ পিস ইয়াবার চালানের ১০ হাজার পিস ইয়াবা বিক্রির টাকা নিয়ে সিন্ডিকেট সদস্যদের মধ্যে দফায়-দফায় বৈঠক হওয়ার বিষয়ে তোলপাড় চলছে।স্থানীয় ভাবে ওই ইয়াবার টাকা উদ্ধার নিয়ে থানা বরাবর অগ্রসর হওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে সুত্রে জানা যায়। একেক সময় একেক রকম অজুহাত দেখাতে থাকায় ওই মগবাগী টাকা না পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ার শব্দ মানুষ শুনতে পায়।এতে কৌশলে ওই মগবাগীকে ইয়াবা আত্মসাৎকারীদের আরেক সিন্ডিকেট সদস্য ঘুমধুমের বড়ুয়া পাড়ার ওই শ্রমিক নেতা তার বাড়িতে নিয়ে আসেন।ওই মগবাগী দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারে ইয়াবার টাকা না পাঠানোয় সীমান্তের ওপারেই এ ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়। এ নিয়ে ঘুমধুম সীমান্তে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।তৎপর হয়ে উঠেছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা।এপারের পরিচিত পাচারকারীদের মাধ্যমেও ওপার থেকে খবর পাঠায় দেড়লাখ পিস ইয়াবার বিক্রিত টাকা ছাড়া মিয়ানমারে ঢুকতে পারবেনা ওই মগবাগী।এমন কি টাকা না পাঠালে ওই মগবাগীর মিয়ানমারে থাকা স্ত্রী-সন্তানদের কেটে ফেলবে।এদিকে ওই মগবাগীকে লোকচক্ষুর আড়ালে রাখতে ঘুমধুম থেকে উত্তর ঘুমধুমের বড়ুয়া পাড়ায় নিয়ে আসলেও তার কোন প্রকাশ্য হঁদিস মিলছেনা।তাকে দেড়লাখ পিস ইয়াবার টাকার পরিবর্তে কি দিয়েছে?নাকি প্রান কেড়ে নিয়ে গুম করেছে?সে জীবিত না মৃত্যু?এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সীমান্তে।অন্তত মানুষ হিসেবে ওই মগবাগীর স্ত্রী-সন্তানদের মানবিকতা বিবেচনায় উদ্ধার করার দাবী উঠছে সীমান্তের সর্বত্র।এদিকে বিভিন্ন মাধ্যমে ওই মগবাগীর ইয়াবা সংক্রান্ত এবং মগবাগীর খোঁজ খবর জানতে চাওয়া হলেও কেউ মুখ খুলছেনা।কিন্তু তাঁরা রয়েছে লোকচক্ষুর আড়ালে।

ট্যাগ :
পাঠকপ্রিয়

চকরিয়ায় বসতভিটা ও দোকান দখলের জন্য হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট: আহত ৫

দেড় লাখ পিস ইয়াবা গাঁয়েব: এপারে আসা এক মগবাগীর হঁদিস নেই

বিজিবি’র পৃথক অভিযান: সাড়ে ১১ কোটি টাকার স্বর্ণ ও ৮০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার:আটক-২

প্রকাশিত সময় : ০৪:২৪:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

উখিয়া,টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ি’র সীমান্ত যেনো উভয় মানবপাচারের নিরাপদ রুট।স্থল ও জলসীমান্ত পয়েন্টে সংশ্লিষ্ট সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কড়া টহল ও নজরদারীর ঘাটতি নেই।তারপরও তাদের নজরদারী ও চোখ ফাঁকি দিয়ে উভয় মুখী আদান-প্রদান অব্যাহত রয়েছে।পাচারকারীরা যেভাবে সক্রিয় থাকুক না কেনো সীমান্তরক্ষী বাহিনীও জব্দ কিংবা আটক অভিযানে পিছিয়ে নেই।সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে কোন না দিন আটক হচ্ছেনা এমন দিন নেয়। এপার থেকে মিয়ানমারে পাচার করছে জ্বালানী তেল,ভোজ্য তেল,ইউরিয়া সার,চাল,ডাল,মরিচ,হলুদ,পেঁয়াজ
,রসুন,মোবাইল সেট,মোবাইল সীম,মোবাইল সামগ্রী,ব্যালট সহ চাহিদার পণ্য সামগ্রী।
বিনিময়ে ওপার থেকে পাচার করে নিয়ে আসছে ইয়াবা,স্বর্ণ, মাদক ও রাজস্ববিহীন গরুর চালান।সম্প্রতি টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ির কয়েকটি সীমান্ত পয়েন্ট থেকে বড়-বড় ইয়াবার চালান জব্দ করেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-কোষ্টগার্ড।তবে আটক বা জব্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে বিজিবি।যেমনি পাচার হচ্ছে,তেমনি আটকও হচ্ছে।আবার চোরাকারবারিরা বিভিন্ন সংস্থার অপপ্রচারেও নেমেছে।চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের সদস্যরা মিয়ানমারের চোরাকারবারিদের নিকট থেকে সরল বিশ্বাস জমিয়ে এপারে নিয়ে আসেন স্বর্ণ ও ইয়াবার বড় চালান।সাথে জিম্মাদার এবং বিশ্বাসী ওপার থেকে দু’য়েকজন মানুষও নিয়ে আসেন।তাদেরকে এপারের চোরাকারবারিরা জামাই আদরে বাড়িতে রাখেন। ওপার থেকে আনা ইয়াবা,স্বর্ণের চালান বিক্রি করে টাকা দেওয়ার নামে কৌশলে আত্মসাৎ করার বহু প্রচার রয়েছে।তেমনি ঘুমধুম সীমান্তে একাধিকবার ইয়াবা ও স্বর্ণের বার আত্মসাত ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।এ খবরে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন তৎপর হলেও পরে রহস্যজনক কারণে ধামাচাপা পড়ে যায়।চোরাকারবারিরা পাচারের জন্য নিরাপদ রুট হিসেবে বেঁচে নিয়েছেন সীমান্তের যেসব সমুহ উখিয়ার পালংখালীর আঞ্জুমান পাড়া,নলবনিয়া,পুটিবনিয়া,থাইংখালীর রহমতেরবিল,ধামনখালী,বালুখালী,ডিগলিয়া,
হাতিমোড়া,ডেইলপাড়া,তুলাতুলী,ভালুকিয়া,মরিচ্যার পাতাবাড়ি,খেওয়াছড়ি,পাগলির বিল,টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্ধীপ,শাহপরীর দ্ধীপ,জালিয়া পাড়া,ক্যাম্প পাড়া,
হারিয়াখালী,নাইট্যংপাড়া,কেরুনতলী,
দমদমিয়া,জাদিমোড়া,লেদা,হ্নীলা,খারাংখালী,
,উনচিপ্রাং হোয়াইক্যং,উলুবনিয়া,কাটাখালী ও নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের নোয়াপাড়া,মন্ডল পাড়া,মধ্যম পাড়া,জলপাইতলী,লেডুর আমবাগান,তুমব্রু পশ্চিমকুল তেতুঁলগাছতলা,লতিফিয়া মসজিদ সংলগ্ন,ঘুমধুম হাইস্কুল বাগান,তুমব্রু পশ্চিমকুল মসজিদ সংলগ্ন,তুমব্রু বাজার পাড়া,কোনার পাড়া,উত্তর পাড়া,ভাজাবনিয়া,চাকমা পাড়া,বাইশ ফাঁড়ী,আমতলী,রেজু,মঞ্জয় পাড়া,বরইতলী,
সোনাইছড়ি,চাকঢালা,আসারতলী,লেবুছড়ি,দোছড়ি পয়েন্ট সমুহ।এসব পয়েন্টে রয়েছে শক্তিশালী পাচারকারী সিন্ডিকেট। যারা দু’দেশের সীমান্তের উভয় মুখী পাচারে সক্রিয় রয়েছে।জলসীমান্তের জন্য টেকনাফ উপজেলার নাফনদী আর স্থল সীমান্তের জন্য উখিয়া এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সবচেয়ে নিরাপদ টার্নিং পয়েন্ট।এদিকে সীমান্ত পয়েন্ট অতিক্রম করে এপারে নিয়ে আসার পথে টেকনাফস্থ -২ বিজিবি’র অভিযানে সাড়ে ১০ কেজি স্বর্ণালংকার-বার,নগদ টাকা, মোবাইল সেট,মিয়ানমারের মুদ্রাসহ ২ জন আটক হয়েছে।আটককৃতরা মিয়ানমারের নাগরিক এমনটাই নিশ্চিত করেছেন টেকনাফস্থ ব্যাটালিয়ন-২ (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) বিজিবি।তাদের কাছে পাওয়া এসব স্বর্ণের আনুমানিক মূল্য ১১ কোটি ৫২ লাখ টাকা।(মঙ্গলবার)১৭ সেপ্টেম্বর দুপুর ১টার দিকে টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।এর আগে, সোমবার ১৬ (সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে টেকনাফ পৌরসভার অলিয়াবাদ নামক এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।আটককৃতরা হলেন, মিয়ানমারের মংডু’র সোদাপাড়া এলাকার মৃত ইউনুছের ছেলে মো. হাফিজুর রহমান (২৮) ও একই এলাকার -মৃত সুলতানের ছেলে মো. আনোয়ার (৩০)।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, মিয়ানমারের দুইজন নাগরিক পাচারের উদ্দেশ্যে টেকনাফ পৌরসভার অলিয়াবাদ এলাকায় অবস্থান নেন। বিজিবি’র গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে চালানো হয়।এ সময় সাড়ে ১০ কেজি স্বর্ণালংকারসহ তাদের আটক করে। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪০ বাংলাদেশি টাকা, ২ লাখ ২৯ হাজার ৫০০মিয়ানমারের মুদ্রা এবং ১০টি মোবাইল ফোন পাওয়া জব্দ করা হয়। উদ্ধার হাওয়া এসব স্বর্ণের আনুমানিক বাজার মূল্য ১১ কোটি ৫২ লাখ টাকা বলে বিজিবি নিশ্চিত করেন।অপরদিকে কক্সবাজারস্থ ৩৪ ব্যাটালিয়ন বিজিবি’র অধীনস্থ
ঘুমধুম বিওপি’র একটি অভিযানিক দল ৮০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে।গত রোববার ভোর সোয়া ৫ টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম বিওপি বিজিবি’র অধীনস্থ বিশেষ টহল দল কর্তৃক বিওপি’র অদুরে উত্তর-পশ্চিমের ঘুমধুম মধ্যম পাড়া এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় মালিক বিহীন এসব ইয়াবা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।উদ্ধার করা ইয়াবা গুলো পাশ্ববর্তী মিয়ানমার থেকে স্থানীয় চোরাকারবারিরা এনে সুযোগ বুঝে পাচারের চেষ্টা করছিল। কিন্তু গোপন সংবাদের ভিত্তিতে স্থানীয় বিজিবি’র সদস্যরা অভিযান চালিয়ে উক্ত ইয়াবা গুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দ করেন বলে জানা গেছে।বিজিবি কর্তৃক আটকের সফলতা রয়েছে। আবার সীমান্তে চোরাকারবারীদের লুটপাটের খবরও রয়েছে।গত কয়েক মাস পুর্বে ঘুমধুমের মধ্যপাড়া এলাকা থেকে স্থানীয় চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য রুবেল ইয়াবার একটি বড় চালান ছিনতাই করে এলাকা থেকে পালিয়ে যায়।মাসদেড়েক পর এলাকায় ফিরে বীরদর্পে পুর্বের পাচার কাজে সক্রিয় রয়েছে।গত ১৭/১৮ দিন পুর্বে ঘুমধুমের তুমব্রু পশ্চিমকুল লতিফিয়া মসজিদ সংলগ্ন পয়েন্ট দিয়ে এপারে পাচার করে আনা দেড় লাখ পিস ইয়াবা আত্মসাৎ করার খবর উড়ছে সর্বত্র।এসব ইয়াবা ঘুমধুম সীমান্তের চিহ্নিত চোরাকারবারি, ২০২১ সালে কক্সবাজারের কলাতলীর মুখে র‍্যাব-১৫’র হাতে বিপুল ইয়াবা, আরো ৪ জন সহযোগীসহ নোয়াহ গাড়ী নিয়ে আটক হওয়া ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের তুমব্রু পশ্চিমকুলের লতিফিয়া মসজিদ সংলগ্নস্থ এলাকার বাসিন্দা।দেড় লাখ পিস ইয়াবার সাথে মিয়ানমারের মগবাগীদের একজন’কে নিয়ে আসেন।ওই মগবাগী দেড় লাখ পিস ইয়াবার সেও একজন পার্টনার।মিয়ানমারেও এসব ইয়াবার আরো অংশীদার রয়েছে।ওই মগবাগীকে তার দেড় লাখ পিস ইয়াবা বিক্রি করে দিয়ে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া পর্যন্ত এপারে রাখেন।ইয়াবা বিক্রির টাকা ছাড়া ওই মগবাগী মিয়ানমারে ফিরতে পারবেন না।তাই এপারে প্রথমে ১০/১২ দিন লতিফিয়া মসজিদ সংলগ্ন একটি টিনের বাড়িতে রাখেন। ইয়াবা গুলো বিক্রির জন্য থাইংখালীর এক সিন্ডিকেট সদস্য, ঘুমধুম ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের বড়ুয়া পাড়ার এক শ্রমিক ও নেতা ইয়াবা সিন্ডিকেট পার্টনার,টিএন্ডটি এলাকার জনৈক কামাল মিলে গাঁয়েব করে ফেলেন।ওই মগবাগীকে বলতে থাকেন ইয়াবা গুলো বিক্রি করেছি।কিন্তু আরেকটা পার্টি বেঈমানী করে টাকা দিচ্ছেনা,আবার বলে বিজিবি মাল ধরে ফেলেছে, তাই আমাদের খুঁজতেছে।আমরা ঘরে থাকতে পারছিনা।আবার প্রচার করছে টিএন্ডটির কামাল মাল নিয়ে পালিয়ে গেছে।তার বাড়িতে তাঁলা মারা।স্ত্রী-সন্তান কেউ নাই।অথচ দেড় লাখ পিস ইয়াবার চালানের ১০ হাজার পিস ইয়াবা বিক্রির টাকা নিয়ে সিন্ডিকেট সদস্যদের মধ্যে দফায়-দফায় বৈঠক হওয়ার বিষয়ে তোলপাড় চলছে।স্থানীয় ভাবে ওই ইয়াবার টাকা উদ্ধার নিয়ে থানা বরাবর অগ্রসর হওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে সুত্রে জানা যায়। একেক সময় একেক রকম অজুহাত দেখাতে থাকায় ওই মগবাগী টাকা না পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ার শব্দ মানুষ শুনতে পায়।এতে কৌশলে ওই মগবাগীকে ইয়াবা আত্মসাৎকারীদের আরেক সিন্ডিকেট সদস্য ঘুমধুমের বড়ুয়া পাড়ার ওই শ্রমিক নেতা তার বাড়িতে নিয়ে আসেন।ওই মগবাগী দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারে ইয়াবার টাকা না পাঠানোয় সীমান্তের ওপারেই এ ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়। এ নিয়ে ঘুমধুম সীমান্তে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।তৎপর হয়ে উঠেছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা।এপারের পরিচিত পাচারকারীদের মাধ্যমেও ওপার থেকে খবর পাঠায় দেড়লাখ পিস ইয়াবার বিক্রিত টাকা ছাড়া মিয়ানমারে ঢুকতে পারবেনা ওই মগবাগী।এমন কি টাকা না পাঠালে ওই মগবাগীর মিয়ানমারে থাকা স্ত্রী-সন্তানদের কেটে ফেলবে।এদিকে ওই মগবাগীকে লোকচক্ষুর আড়ালে রাখতে ঘুমধুম থেকে উত্তর ঘুমধুমের বড়ুয়া পাড়ায় নিয়ে আসলেও তার কোন প্রকাশ্য হঁদিস মিলছেনা।তাকে দেড়লাখ পিস ইয়াবার টাকার পরিবর্তে কি দিয়েছে?নাকি প্রান কেড়ে নিয়ে গুম করেছে?সে জীবিত না মৃত্যু?এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সীমান্তে।অন্তত মানুষ হিসেবে ওই মগবাগীর স্ত্রী-সন্তানদের মানবিকতা বিবেচনায় উদ্ধার করার দাবী উঠছে সীমান্তের সর্বত্র।এদিকে বিভিন্ন মাধ্যমে ওই মগবাগীর ইয়াবা সংক্রান্ত এবং মগবাগীর খোঁজ খবর জানতে চাওয়া হলেও কেউ মুখ খুলছেনা।কিন্তু তাঁরা রয়েছে লোকচক্ষুর আড়ালে।