বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফরিদুল আলমের সহযোগিতায় মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে মিয়ানমারের ৩ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড)হাতে পেয়েছে।এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের চাকঢালার আমতলী মাঠ এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সালামের পুত্র জাহাঙ্গীর আলম প্রতিকার চেয়ে এবং দূর্নীতিপরায়ন ইউপি সদস্য ফরিদুল আলমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ প্রশাসনের একাধিক দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ের (২০অক্টোবর)পরিপত্র ২৪৯৬১ নং এ দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বর্তমানে দায়িত্বরত ইউপি সদস্য চাকঢালা আমতলী মাঠ এলাকার আলী মিয়ার পুত্র ফরিদুল আলম (৪৮) নিজেকে বিগত সময়ে আওয়ামীলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে এলাকার অসহায় লোকজনকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করে আসছিল।এছাড়া ক্ষমতার প্রভাবে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে একাধিক মিয়ানমারের (রোহিঙ্গা) নাগরিককে ভোটার করেছেন। সর্বশেষ এই ফরিদুল আলম মোটার অংকের অর্থের বিনিময়ে এক রোহিঙ্গা নারীকে নিজের বোন সাজিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি কার্ড) তৈরী করে দিয়েছেন।
জানা যায়, অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ফরিদুল আলম মিয়ানমারের নাগরিক মরিয়ম খাতুনকে ভোটার নিবন্ধন ফরমে নিজের বোন পরিচয় দিয়ে সদর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করেছেন। মরিয়ম খাতুনের জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি কার্ড) নং ১৯৭২০৩১৭৩৭৬৩৫৩৯৬৩। পরবর্তীতে দূর্নীতিপরায়ন ইউপি সদস্য ফরিদুল আলম মরিয়ম খাতুনের জাতীয় পরিচয় পত্র দাখিল করে তার ছেলে ও মেয়েকে বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করে নেন। মরিয়ম খাতুনের ছেলে ছৈয়দ আলম, পিতা আব্দুস সালামের জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি কার্ড) নং – ৩৭৫০৫৯৬৭৪৮ এবং মরিয়ম খাতুনের মেয়ে মনোয়ারা বেগম পিতা আব্দুস সালাম, স্বামী ফরিদ আলমের জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি কার্ড) নং – ৮২৩৮৮৫৫২৭৭।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী জাহাঙ্গীর আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি স্ব-শরীরে হাজির হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার,নির্বাচন অফিসার সহ একাধিক দপ্তরে ইউপি সদস্য ফরিদুল আলম ও তিন রোহিঙ্গা নাগরিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেছি। আমি এই অভিযোগের প্রতিকার চাই।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ফরিদুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউপি সদস্য হিসেবে যাচাই-বাছাই করার দায়িত্ব থাকে। ভোটার নিবন্ধন করার দায়িত্ব আমার নয়,উপজেলার বিশেষ কমিটির।রোহিঙ্গাদের নাম কিভাবে যাচাই-বাছাই করলেন? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কাগজ পত্র ছিল, তাই করেছি। আমার ভূলও হতে পারে।
এই বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন বলেন, এই বিষয়ে আমি সম্পৃক্ত নই। আমার ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আমার অনুপস্থিতিতে প্যানেল চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে এ তিনজনকে ভোটার করেছেন বলে জেনেছি।
এই বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসমাত জাহান ইতু বলেন, তিনজন রোহিঙ্গা নাগরিককে সদর ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্য কর্তৃক ভোটার করেছেন মর্মে একটি অভিযোগ পেয়েছি। এই বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।